• ঢাকা বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

সোনালী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে ১৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

তানভীর হায়দার

  ২৩ অক্টোবর ২০১৭, ১৫:২০

সোনালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ শাখা ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে গ্রাহকের ১৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এরপর অভিযুক্ত শাখা ব্যবস্থাপককে ১৭ অক্টোবর কিশোরগঞ্জ থেকে প্রত্যাহার করে ময়মনসিংহ জোনাল অফিসে বদলি করা হয়েছে। এ ঘটনায় সোনালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন। পরে মামলাটি থানা থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় ক্ষতির শিকার অর্ধশতাধিক গ্রাহক প্রতিদিন ব্যাংকে এসে খোঁজ নিচ্ছেন। গ্রাহকরা তাদের টাকা ফিরে পাওয়ার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ সোনালী ব্যাংক শাখার ব্যবস্থাপক সাইফুদ্দিন সবুজ অনেক দিন ধরেই ব্যাংকে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছিলেন। সম্প্রতি অন্তত ৭০ থেকে ৮০ জন ব্যবসায়ীকে মোটা অংকের টাকা ঋণ দেয়ার নাম করে গ্রাহকের ব্যাংক চেকে স্বাক্ষর নিয়ে নেন। পরে ওইসব গ্রাহকের নামে ঋণ দেখিয়ে ব্যাংক চেকে পরিমাণমতো টাকা বসিয়ে সে টাকা তুলে আত্মসাত করেন তিনি। গ্রাহকদের নামে ঋণ মঞ্জুর হলেও তারা খবর নিয়ে দেখেন তাদের একাউন্টে কোনো টাকা নেই। সেই টাকা উত্তোলন করা হয়ে গেছে। এছাড়া অনেক গ্রাহকের নিকট থেকে একাউন্টে টাকা জমা দেয়ার কথা বলে রশিদ দেয়। কিন্তু তারাও খবর নিয়ে দেখেন রশিদ দেয়া হলেও তাদের একাউন্টে কোনো টাকা নেই। এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে সকল গ্রাহক ব্যাংকে এসে খবর জানতে চান। একাউন্টে টাকা না থাকায় গ্রাহকরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। টাকা হারিয়ে কী করবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না তারা।

কিশোরগঞ্জ শহরের উকিলপাড়া জামিয়া রোডের বাসিন্দা ঠিকাদার আশিক জামান এলিন আরটিভি অনলাইনকে জানান, তিনি সোনালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ শাখায় চার লাখ ২০ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন। কিন্তু এখন তার একাউন্টে কোনো টাকাই নেই। পুরো টাকাটাই শাখা ব্যবস্থাপক সবুজ আত্মসাত করেছেন।

শহরের পাগলা মসজিদ এলাকার বিসমিল্লাহ লাইব্রেরির মালিক জুলহাস সওদাগর আরটিভি অনলাইনকে জানান, তিনি কয়েকদিন আগে ব্যাংকে ৮০ হাজার টাকা জমা দিয়ে রশিদ নিয়ে চলে যান। এরপর ১৩ অক্টোবর তিনি টাকা তুলতে গিয়ে দেখেন তার একাউন্টে কোনো টাকা নেই।

কিশোরগঞ্জ সদরের মোল্লাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ভাই ভাই ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিক মো. আক্তার হোসেন আরটিভি অনলাইনকে জানান, তিনি তিন মাস আগে ১০ লাখ টাকা ঋণের জন্যে আবেদন করেন। এ সময় শাখা ব্যবস্থাপক সাইফুদ্দিন সবুজ তিনটি খালি চেকে স্বাক্ষর রাখেন। কয়েকদিন আগে ব্যাংকে এসে খবর নিয়ে দেখেন যে তার নামে ১০ লাখ টাকা ঋণ উত্তোলন করা হয়েছে। এ খবর জানার পর থেকেই তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।

এ ধরনের অসংখ্য অভিযোগ শাখা ব্যবস্থাপক সাইফুদ্দিন সবুজের বিরুদ্ধে পাওয়া গেছে। ৭০ থেকে ৮০ জন গ্রাহকের অন্তত ১৫ কোটি টাকা আত্মসাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

কিশোরগঞ্জ সোনালী ব্যাংকে সদ্য যোগদানকারী শাখা ব্যবস্থাপক মো. মাহবুবুল ইসলাম খান আরটিভি অনলাইনকে জানান, এখন পর্যন্ত ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় দুটি টিম তদন্ত করছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কিশোরগঞ্জ সোনালী ব্যাংক আঞ্চলিক শাখার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার নুর মোহাম্মদ আরটিভি অনলাইনকে জানান, এ ঘটনায় সাইফুদ্দিন সবুজের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় মামলা করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পাঁচ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। নতুন নতুন অভিযোগ আসছে। সবগুলোই আমলে নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ওসি খোন্দকার শওকত জাহান আরটিভি অনলাইনকে জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে। পরে মামলাটি দুর্নীতি সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠানো হয়।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শাখা ব্যবস্থাপক সাইফুদ্দিন সবুজের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর ফোনে বারবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
৪৪ বিলিয়ন ডলার জালিয়াতির দায়ে ভিয়েতনামের ধনকুবেরের মৃত্যুদণ্ড
গ্রামীণ ব্যাংকের দুই কর্মকর্তার কারাদণ্ড
স্বামীকে দুলাভাই পরিচয় দেওয়া সেই মিম রিমান্ডে
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক এমপি তানভীর ইমামের বিরুদ্ধে মামলা
X
Fresh