• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন, প্রেমের কারণেই রাউধার আত্মহত্যা

রাজশাহী প্রতিনিধি

  ১৭ অক্টোবর ২০১৭, ১৮:১৮

প্রেমের সম্পর্কের কারণেই মালদ্বীপের নাগরিক ও রাজশাহী ইসলামী মেডিকেল কলেজের ছাত্রী রাউধা আথিফ আত্মহত্যা করেছেন বলে আদালতে দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এই প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এই প্রতিবেদনে রাউধার মৃত্যুর জন্য কাউকে অভিযুক্তও করা হয়নি। মামলার তদন্ত থেকে রাউধার সহপাঠী ও ভারতীয় নাগরিক সিরাত পারভীন মাহমুদকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আসমাউল হক বলেন, ‘লন্ডনে পড়াশোনা করা মালদ্বীপের নাগরিক শাহী গণির সঙ্গে রাউধার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। রাউধার হোয়াটসঅ্যাপ থেকে জানা গেছে, শাহীর সঙ্গে রাউধার সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছিল। এ নিয়ে প্রচণ্ড মানসিক চাপে ছিলেন রাউধা। আত্মহত্যার আগের রাতেও শাহীর সঙ্গে রাউধার কথা হয়েছিল। তদন্ত করে রাউধা আথিফের আত্মহত্যার বিষয়টিই খুঁজে পাওয়া গেছে।’

এর আগে দুইদফায় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, মালদ্বীপের এই মডেল আত্মহত্যা করেছেন।

রাজশাহী মহানগর জজ আদালতের পরিদর্শক আবুল হাশেম জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক আসমাউল হক সোমবার সন্ধ্যায় তাদের কাছে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। মঙ্গলবার দুপুরে তারা সেটি রাজশাহীর মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত-১ এ উপস্থাপন করেন।

আবুল হাশেম আরো বলেন, ‘মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে কাউকে অভিযুক্ত করা হয়নি। রাউধাকে হত্যা করা হয়েছিল, এমনটিও বলা হয়নি। তাই বাদীপক্ষের আইনজীবী এই প্রতিবেদনে নারাজি দিতে চান। এজন্য তিনি বিচারক মাহবুবুর রহমানের কাছে সময় প্রার্থনা করেছেন। তবে এ বিষয়ে আদালত এখনও কোনো আদেশ দেননি।’

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক আসমাউল হক জানান, দুই দফার ময়নাতদন্ত, ভিসেরা ও মুঠোফোন পরীক্ষার পর রাউধার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এরপরই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। তদন্ত শেষে ও প্রতিবেদন দাখিলের আগে এ বিষয়টি রাউধার বাবা মোহাম্মদ আথিফকেও গেলো ১৫ অক্টোবর জানানো হয়েছে। আর এই মামলার তদন্ত থেকে রাউধার সহপাঠী সিরাতকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গেলো ২৯ মার্চ রাজশাহীর নওদাপাড়ায় ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রীনিবাস থেকে রাউধা আতিফের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি ওই কলেজের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। রাউধার মৃত্যুর দিনই কলেজ কর্তৃপক্ষ শাহমখদুম থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করে। রাউধার মরদেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে রাজশাহীতে দাফন করা হয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাউধা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এরপর মালদ্বীপের দুই পুলিশ কর্মকর্তা রাজশাহীতে এসে ঘটনা তদন্ত করেন।

এদিকে রাউধার মৃত্যুর ঘটনায় কলেজের পক্ষ থেকেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সে কমিটিও তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, রাউধা আত্মহত্যা করেছেন। তবে রাউধার বাবা মোহাম্মদ আথিফ এসব প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে গত ১০ এপ্রিল রাজশাহীর আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় রাউধার সহপাঠী ভারতের কাশ্মীরের মেয়ে সিরাত পারভীন মাহমুদকে একমাত্র আসামি করা হয়। কিন্তু সিরাতকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

গত ১৪ এপ্রিল হত্যা মামলাটি শাহমখদুম থানা থেকে সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। এরপর কবর থেকে মরদেহ তুলে দ্বিতীয়বারের মতো রাউধার মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। দ্বিতীয় দফার ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, রাউধা আত্মহত্যা করেছেন। তবে মোহাম্মদ আথিফ এখনও দাবি করে আসছেন, তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। মামলার পর থেকে তিনি রাজশাহীতেই অবস্থান করছেন।

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh