• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ধর্ষণের অপমান সইতে না পেরে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

  ১৩ অক্টোবর ২০১৭, ১২:৪২

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় অব্যাহত ধর্ষণের অপমান সহ্য করতে না পেরে রহিমা আক্তার সোনিয়া নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সোনিয়া তেঁতুলিয়া কাজী শাহাবুদ্দিন বালিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও উপজেলার কালারাম জোত গ্রামের পাথর শ্রমিক জাহেরুল ইসলামের মেয়ে।

জানা যায়, তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইমার্জেন্সি এটেন্ডেন্ট মনসুর আলী রাজন ও বাংলালিংকের কাস্টমার কেয়ারের কর্মকর্তা ও বিকাশ এজেন্ট আতিকুর রহমান আতিক নামের দুই যুবক ইন্টারনেটে ধর্ষণের ভিডিও ফুটেজ প্রচারসহ প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখায়। এতে মঙ্গলবার সোনিয়া ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।

ওই রাতেই ধর্ষণ এবং আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগে সোনিয়ার পরিবারের লোকজন থানায় মামলা করতে গেলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ মামলা নেয়নি।

তবে থানায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলার পর বুধবার (১১ অক্টোবর) ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে সোনিয়ার মরদেহ হস্তান্তর করেছে পুলিশ। ঘটনার পর পরই ওই দুই ধর্ষক গা ঢাকা দিয়েছে। এদিকে সোনিয়ার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

প্রায় তিন মাস আগে অসুস্থ মায়ের জন্য ওষুধ নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তেতুঁলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইমার্জেন্সি এটেন্ডেন্ট ও তেঁতুলিয়া বাজারের রাজন ফার্মেসির মালিক মনসুর আলী রাজন সোনিয়াকে তার দোকানে ডেকে আনে। পরে ওষুধ বাসায় আছে বলে সোনিয়াকে মোটরসাইকেলে করে বাংলালিংকের কাস্টমার কেয়ারের কর্মকর্তা বিকাশ এজেন্ট আতিকের তেঁতুলিয়া উপজেলা শহরের বাসায় নিয়ে যায়। বাসায় স্ত্রী না থাকার সুযোগ নিয়ে ঘরের ভেতরে রাজন ও সোনিয়াকে রেখে বাইরে থেকে তালা দিয়ে চলে যায় আতিক। এভাবেই প্রথমে রাজন পরে আতিক তাকে ধর্ষণ করে এবং ভিডিও ধারণ করে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে সেই ভিডিও ফুটেজ প্রচার ও কাউকে জানালে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে গেলো তিন মাস বিভিন্ন সময়ে তারা সোনিয়াকে ধর্ষণ করে। ঘটনাটি সহ্য করতে না পেরে গেলো নয় অক্টোবর সোনিয়া ঘটনাটি তার মা ও মামা ফারুক হোসেনকে জানায়। বিষয়টি প্রকাশ করে দেয়ায় রাজন ও আতিক ধর্ষণের ভিডিও ফুটেজ প্রচারের ভয় দেখায় এবং নানা রকম হুমকি দিতে থাকে। এই অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় সোনিয়া।

সোনিয়ার মামা ফারুক হোসেন আরটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আত্মহত্যা করার আগের দিন সোনিয়া আমাকে ঘটনাটি খুলে বলেছে। আমি এই দুই ধর্ষক রাজন ও আতিকের বিচার চাই’।

সোনিয়ার মা সেলিনা বেগম আরটিভি অনলাইনকে জানান, রাজন ও আতিক আমার মেয়েকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য করেছে। আমি মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।

তবে সোনিয়াকে ধর্ষণ ও আত্মহত্যার প্ররোচণায় কোনো মামলা নেয়নি পুলিশ। আসামিদেরও ধরেনি। অভিযোগ সোনিয়ার পরিবারের।

সোনিয়া বাবা জাহেরুল ইসলাম আরটিভি অনলাইনকে জানান, বুধবার রাতে ধর্ষণ এবং আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগে রাজন ও আতিকের নামে তেঁতুলিয়া থানায় মামলা করতে যাই। কিন্তু পুলিশ মামলাটি রেকর্ড করেনি। আসামিদেরও ধরেনি।

তবে মামলা না নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তেঁতুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরেস চন্দ্র আরটিভি অনলাইনকে জানান, সোনিয়া আত্মহত্যা করেছে এমন সংবাদ শুনে আমরা একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা রেকর্ড করেছি। পরিবারের পক্ষ থেকে কারো বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাইনি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেবি/জেএইচ

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
প্রেমিকার উপহারের পোশাক পরে তরুণের আত্মহত্যা
মন্দিরে সিঁদুর পরিয়ে নারীকে ধর্ষণ, অতঃপর....
পল্টনে ছয়তলা ভবন থেকে লাফিয়ে নারীর আত্মহত্যা
স্বামীর সঙ্গে মুড়ি খাওয়া নিয়ে ঝগড়া, গৃহবধূর আত্মহত্যা
X
Fresh