লালন ভক্ত হওয়ায় জানাজা পড়াননি ইমামরা
লালন ভক্ত হওয়ায় মাগুরা সদর উপজেলায় মৃত্যুর পর এক ব্যক্তির জানাজা পড়াননি স্থানীয় ইমামরা।
উপজেলার চাঁনপুর গ্রামের নূরু ইসলাম (৫০) কিডনি ও লিভারের অসুখে আক্রান্ত হয়ে সোমবার রাতে মাগুরা সদর হাসপাতালে মারা যান।
নূরুল ইসলামের বড় ছেলে হাসান জোয়ার্দার জানান, তার বাবা নূরুল ইসলাম লালন অনুসারী হওয়ায় ও নামাজ পড়েনি দাবি করে তার জানাজায় ইমামতি করতে অস্বীকৃতি জানান চাঁনপুর ও আশেপাশের বিভিন্ন মাদরাসা ও মসজিদের ইমামরা।
তাদের মধ্যে স্থানীয় ধলহারা পূর্বপাড়া মসজিদের মুয়াজ্জিন আতিয়ার রহমান, চাঁনপুর জোয়ার্দার পাড়া মসজিদের ইমাম ইউনুছ আলী, চাঁনপুর গোরস্থান মাদরাসার ইমাম তরিকুল ইসলাম রয়েছেন বলে জানান তিনি।
হাসান বলেন, তারা একতাবদ্ধ হয়ে চাঁনপুর গোরস্থান মাদরাসায় বৈঠক করে বাবার জানাজায় অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এ কারণে এলাকার কোনো ইমাম তার জানাজা পড়াননি।
নূরুল ইসলামের শ্যালক কাজী আকিদুল জানান, মৃত্যুর পর স্থানীয় মসজিদ মাদরাসার ইমামরা জানাজা পড়াতে অস্বীকৃতি জানালে তার ভাগ্নে হেমায়েত উদ্দিন মহম্মদপুর থেকে এসে তার জানাজা পড়ান।
পরে সকাল ১০টার দিকে চাঁনপুর কবরস্থান সংলগ্ন হাফেজিয়া মাদরাসা মাঠে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।
এ বিষয়ে চাঁনপুর গোরস্থান মাদরাসার ইমাম তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘তার জানাজায় কেউ বাধা দেয়নি। তবে নূরুল ইসলাম অন্য মতাদর্শে বিশ্বাসী হওয়ায় এবং অনেক আগেই ইসলাম ধর্মের পথ থেকে সরে আসায় তার জানাজা বয়কট করা হয়েছে। তিনি ইসলাম ধর্ম নিয়ে বিভিন্ন সময়ে আমাদের সঙ্গে বাদানুবাদ করেছেন।'
নূরুল ইসলাম ‘দরি মাগুরা লালন সাধু সংঘের’ সদস্য ছিলেন।
ওই সংঘের অন্যতম গুরু তিলাম হোসেন মাস্টার বলেন, ‘নূরুল ইসলাম দরি মাগুরা সাধু সংঘের সদস্য ছিলেন। ইসলাম ধর্মের সঙ্গে আমাদের মতাদর্শের কোনো বিরোধ নেই। ইসলামে মানুষ সর্বশ্রেষ্ঠ জীব। আমরাও মানুষকে ভালবেসেই গানে গানে আমাদের মতাদর্শ প্রচার করি।
‘এ কারণে এটিকে ইসলামবিরোধী বলে কেউ ব্যাখ্যা দিলে দুঃখজনক।’
জেবি
মন্তব্য করুন