• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের তীব্র সংকটে বানভাসিরা (ভিডিও)

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ১৭ আগস্ট ২০১৭, ১৮:৩০

ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি অনেক অঞ্চলে উন্নতি হয়েছে। তবে এসব বানভাসি এলাকার মানুষ এখন বিশুদ্ধ পানি আর খাবারের তীব্র সংকট ভুগছে। আবার এরইমধ্যে নতুন নতুন অঞ্চলও প্লাবিত হচ্ছে। ফলে এসব এলাকার দুর্ভোগ এখন আরো চরমে।

আমাদের জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো বিভিন্ন সচিত্র প্রতিবেদনে বন্যা কবলিত এসব অঞ্চলের মানুষের অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে।

নীলফামারী

নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকায় তিস্তার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও বন্যার্তদের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। ২ লাখেরও বেশি মানুষ এখন বিশুদ্ধ পানি আর খাদ্য সংকটে রয়েছেন। ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্য সেবাও। ডিমলায় পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের বন্যায় তিস্তা পাড়ের ৩০১টি পরিবারের বসতভিটা বিলীন হলেও মাত্র ৮০টি পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়েছে।

নীলফামারী জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় জানিয়েছে, সরকারিভাবে জেলায় ১৯৬ মেট্রিক টন চাল, ৯ লাখ টাকা ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

রংপুর

রংপুরে তিস্তা, ঘাগট, যমুনেশ্বরীসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বাড়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া, পীরগাছা, মিঠাপুকুর ও বদরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় দেড় লাখের বেশি মানুষ। গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা ইউনিয়নের রাজবল্লভ, ছালাপাক ও রমাকান্ত এলাকায় এখনো প্রায় ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি। এসব এলাকায় যাবার একমাত্র পথ হলো নৌকা। উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের পক্ষ থেকে বুধবার সকালের দিকে শুকনো খাবার পৌঁছানো হয়েছে।

গাইবান্ধা

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা, পলাশবাড়ী, গোবিন্দগঞ্জ ও সদর উপজেলার ৪২টি ইউনিয়ন এবং গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভা বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। জেলা প্রশাসনের তথ্যানুযায়ী, ২ লাখ ৮৪ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ৯০টি আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য এ পর্যন্ত ৫শ’ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৫০ মেট্রিক টন চাল এবং সাড়ে ৩ লাখ টাকা বন্যা দুর্গত এলাকায় বিতরণ করা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলার ৬২টি ইউনিয়নের ৮২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ১ লাখ ১৭ হাজার পরিবারের ৪ লাখের মতো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। নদী ভাঙনে বিলীন হয়েছে ২ হাজার ৬৯৪টি বাড়ি। ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্র, উঁচু রাস্তা ও বাঁধে আশ্রিত লোকসংখ্যা ১ লাখ ১৭০ জন। বন্যার্তদের জন্য সাড়ে ১৭ লাখ ৫ হাজার টাকা, ৬৫১ মেট্রিক টন চাল ও ২ হাজার শুকনো খাবার প্যাকেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

নেত্রকোনা

নেত্রকোনার ১০ উপজেলার ৮৬টি ইউনিয়নের ৫০টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়েছে। জেলার দুর্গাপুর, কলমাকান্দা, বারহাট্টা, পূর্বধলা, সদর উপজেলার ৩০টি ইউনিয়নের ৩১ হাজার ৫৮৮টি পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেসরকারি হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি। নেত্রকোনায় বন্যা কবলিত এলাকায় শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট চলছে। বন্যা কবলিত ৯টি উপজেলার মধ্যে মাত্র ৩ উপজেলায় ত্রাণ পৌঁছেছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।

জামালপুর

জামালপুরে যমুনার পানি সামান্য কমতে শুরু করেছে। তবে ভাটি অঞ্চলে বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সার্বিক পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। জেলা সদরসহ সাতটি উপজেলায় প্রায় ৬ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। ৮৭৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। এছাড়া বন্যায় তলিয়ে গেছে প্রায় ৩৩ হাজার হেক্টর ফসলি জমি।

ঠাকুরগাঁও

ঠাকুরগাঁওয়ে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে এখনো ঘরে ফেরার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। জেলার ৫টি উপজেলায় ৪০টি ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার্তদের সহায়তায় ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এরইমধ্যে ৫ লাখ টাকা, ২২০ মেট্রিক টন চাল এবং ১ হাজার প্যাকেট (চিড়া, গুড়, মুড়ি, বিস্কুট) শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া বন্যার্তদের পুনর্বাসনের জন্য ২০ লাখ টাকা এবং ২শ’ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ চেয়ে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে জেলা প্রশাসন।

সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জের ৫ উপজেলার ৩ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কেউবা নৌকায় কেউবা ঘরের চালে কেউবা চৌকি উঁচু করে রান্নাবান্না করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। টিউবওয়েল তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। দেখা দিয়েছে হাত-পায়ে ঘা। আর চরাঞ্চলগুলো একেবারে তলিয়ে যাওয়ায় উঁচু জায়গার অভাবে অনেকে ঘরে চালে বা নৌকায় আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাল ও নগদ টাকা বিতরণ করা হলেও চরাঞ্চলে এখনো অনেক জায়গায় তা পৌঁছেনি।

দিনাজপুর

দিনাজপুর জেলার ৫ লাখের বেশি মানুষ ৩৮৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। এদিকে বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও বেড়েছে খাদ্য সংকট ও রোগ-বালাই। বন্যার্তদের মাঝে দিনাজপুর জেলা প্রশাসন এরইমধ্যে ১১ লাখ টাকা, ২৭৫ মেট্রিক টন চাল ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার (চিড়া, গুড়, মুড়ি ও বিস্কুট) বিতরণ করেছে। আরো ৫০ লাখ টাকা ও ৩০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ চেয়ে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। প্রশাসনের ১২৫টি স্বাস্থ্য ক্যাম্পের পাশাপাশি চিকিৎসা দিচ্ছেন সেনা ও বিজিবির সদস্যরাও।

সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান জানান, জেলার বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের জন্য ত্রাণ হিসেবে ২২৩ মেট্রিক টন চাল, ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা এবং ২ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবারের বরাদ্দ পাওয়া গেছে।

পঞ্চগড়

পঞ্চগড়ে এখনো অনেকে ত্রাণ পায়নি। বুধবার ৫ উপজেলা ও এক পৌরসভার জন্য ২০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

কে/সি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
তরমুজের সঙ্গে বা পরে খাবেন না যেসব খাবার
ঈদের দিন কারাবন্দিদের জন্য বিশেষ খাবার
জয়েন্টের ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছেন, যে ৫ খাবারেই দ্রুত কমবে যন্ত্রণা
যে ৬ খাবারেই কমবে কোলেস্টেরল থেকে ডায়াবেটিস
X
Fresh