• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

নেত্রকোনায় দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি, ২ উপজেলায় সড়ক যোগাযোগ বন্ধ

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট, নেত্রকোনা

  ১৬ আগস্ট ২০১৭, ২৩:৪২

নেত্রকোনায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এখনো কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর উপজেলার সঙ্গে জেলা শহরসহ সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। জেলায় প্রায় দেড় লাখের ওপরে মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। পানিতে পড়ে দু’ব্যক্তি মারা গেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার একমাত্র সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমার নিচে আছে।জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু তাহের বুধবার বিকেল পাঁচটায় বলেন, সোমেশ্বরীর দুর্গাপুর পয়েন্টে বিপদ সীমার ১৭৭ সে.মি নিচে আছে। আগে সোমেশ্বরীর দুর্গাপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ১৪৫ সে.মি ওপরে ছিল। এছাড়া তিনটি নদীর পানি এখনো বিপদসীমার ওপরে আছে তবে আগের চেয়ে পানি কমতে শুরু করছে। এর মধ্যে কংস নদের জারিয়া পয়েন্টে ১৮৮ সে.মি থেকে কমে ১২৮ সে.মি, উব্দাখালি নদীর কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপদসীমার ১১০ সে.মি থেকে ৭৫ সে.মি এসেছে।এদিকে খালিয়াজুরির ধনু নদীর পানি বাড়ছে। ধনু নদীতে গেলো মঙ্গলবার ছিল ১৪ সে.মি। এখন তা বেড়ে ৩৮ সে.মি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত জেলার ১০টি উপজেলায় প্রায় দেড় লাখের মতো মানুষ পানিবন্দি আছে। বন্ধ হয়ে গেছে ১৮৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ১৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া পানি ঢুকেছে প্রায় ৪০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। পানির নিচে আছে ১২ হাজার ৮শ’৩০ হেক্টর আমন ফসল। এর মধ্যে কলমাকান্দা উপজেলায় দু’হাজার ৩শ’৫৫ হেক্টর, দুর্গাপুর উপজেলায় তিন হাজার ১শ’২৫ হেক্টর, সদরে তিন হাজার ৮শ’ হেক্টর আমন ধানের চারা পানির নিচে আছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিলাস চন্দ্র পাল আরটিভি অনলাইনকে বলেন, এক দুই দিনের মধ্যে পানি না কমলে পানির নিচে থাকা আমন ধানের চারাগুলো ক্ষতি হয়ে যাবে। তিনি জানান, এ বছর এক লাখ ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।’

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শঙ্কর কুমার বসাক আরটিভিকে বলেন, প্রায় ১২ হাজারের মতো গবাদি পশু খাদ্য সংকটে আছে।

নেত্রকোনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী দিদারুল আলম তরফদার আরটিভিকে বলেন, চারটি সড়কে ১১ কিলোমিটার পথ ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে কলমাকান্দা-ঠাকুরাকোনা ৭ কিলোমিটার, শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি ৩ কিলোমিটার পথ রয়েছে। ওই সড়ক দু’টি দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে ৫-৭ দিন সময় লাগবে। তবে ঈদের আগে যেভাবেই হোক চারটি সড়কই মেরামত করা হবে।

এ দিকে গেলো মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পানিতে পড়ে কলমাকান্দায় দু’ব্যক্তি মারা গেছেন। কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চকপাড়া গ্রামের মকবুল হোসেন (৮৫) চা খেতে বাড়ির কাছে কালিহলা বাজারে যাচ্ছিলেন। পথে বন্যার পানিতে ডুবো রাস্থা পাড়ি দেয়ার সময় পিছলে পড়ে যান পানিতে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক মকবুল হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। আর মণ্ডলেরগাতি গ্রামের আব্দুল মন্নানের ছেলে জামাল মিয়া (৫০) ধান ভাঙ্গার মেশিন নিয়ে নৌকায় চড়ে যাচ্ছিলেন উদয়পুর বাজারে। বাজারের কাছাকাছি পৌঁছলে বন্যার পানির তোড়ে হেলে যাওয়া খুটির সঙ্গে সংযুক্ত পল্লিবিদ্যুতের ঝুলন্ত তার নৌকাটির সঙ্গে লেগে যায়। এ সময় জামাল মিয়া বিদ্যুতের স্পর্শে ছিটকে পানিতে পড়ে মারা যান।

জেলা প্রশাসক মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কলমাকান্দা, দুর্গাপুর ও পূর্বধলা উপজেলার জন্য আপাদত নগদ দুই লাখ টাকা ও ৩৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে।’

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh