• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

তিন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, বিশুদ্ধ পানির অভাব (ভিডিও)

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ০৫ জুলাই ২০১৭, ১১:০৮

টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট ও মৌলভীবাজারসহ বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সিলেটে নতুন করে তলিয়ে গেছে কুশিয়ারা অববাহিকার আরো কিছু নিচু এলাকা। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অনেক মানুষ।

সিলেটে প্রতিদিনই আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ভিড় বাড়ছে। বন্যার কারণে সিলেটের আরো ২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

বন্যায় সিলেটের ৫৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ৪৬৬টি গ্রাম ও ৪ হাজার ৩৩০ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩২ হাজার ৭৪৮ পরিবার।

বৃষ্টিপাত আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা, কোম্পানীগঞ্জ ও ছাতকের আরও নতুন নতুন গ্রাম। এ পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার আশঙ্কাও করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বন্যায় টিউবওয়েল তলিয়ে যাওয়ায় প্লাবিত গ্রামগুলোতে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। পানিবাহিত রোগ ও ভাইরাস জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় রোগীরা চিকিৎসকদের কাছে ভিড় জমাচ্ছেন।

সিলেটের জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার জানান, জেলা প্রশাসনের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী রয়েছে। উপজেলাগুলোর ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়নে ত্রাণ সামগ্রী যথাযথভাবে বিতরণ করা হচ্ছে কিনা সেগুলো তদারকি করা হচ্ছে।

এদিকে মৌলভীবাজারের সীমান্তবর্তী বড়লেখা, জুড়ি ও কুলাউড়ার একাংশের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। আর মৌলভীবাজারের রাজনগরের ৩টি ইউনিয়নে এবং মৌলভীবাজার সদরের ২টি ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বন্যা স্থায়ী হয়ে পড়েছে। আর কুশিয়ারা নদীর পানি সবসময়ই ধীরে নামে তাই এ জেলার বন্যা আরো স্থায়ী হবে।

জেলা প্রশাসন জানায়, রোববার পর্যন্ত ১৮টি বন্যা আশ্রয়ণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। যারমধ্যে ৪১৩টি পরিবারে ২৬১২ জন আশ্রয় নিয়েছেন। গেলো এপ্রিল থেকে বন্যার্তদের জন্য মৌলভীবাজার জেলায় ৬৫০ মেট্রিক টন চাল ও ৩০ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা নগদ বিতরণ করা হয়েছে।

হাওরের নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দিদের মধ্যে কোনো স্থানে এখনো ত্রাণ পৌঁছেনি বলে অভিযোগ করেছেন সেখানকার বাসিন্দারা। আর যেসব সংস্থা, ব্যক্তিরা ত্রাণ নিয়ে আসছেন তারাও শুধু উপজেলা শহরের প্রধান সড়কের পাশে ত্রাণসামগ্রী দিয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

অন্যদিকে মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বান্দরবানের লামা-আলীকদম সড়কের কয়েকটি পয়েন্টে বন্যার পানি উঠায় সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। পানিতে ডুবে গেছে কয়েকশ’ বাড়িঘর, দোকান পাট। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। এছাড়া ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় পাহাড় ধসের আশঙ্কায় সর্তকতা জারী করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

আলীকদম উপজেলার নয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফোগ্যা মার্মা জানান, বন্যায় তার ইউনিয়নসহ উপজেলার মংচা পাড়া, রোয়াম্ভু, বশির কারবারী পাড়া, যোগেন্দ্র পাড়া, মোস্তাক পাড়া, রেপার পাড়া, বাজার পাড়া, ছাবের মিয়া পাড়া, আমতলীর চরসহ বেশ কিছু এলাকার কয়েকশ’ ঘর-বাড়ি বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। প্রায় দুই হাজারেরও বেশি মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।

লামা পৌর সভার মেয়র জহিরুল ইসলাম জানান, গেলো ৩ দিনের ভারি বর্ষণে সোমবার সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত লামা বাজার, নুনার বিল, ছাগল খাইয়া, পুলিশ কোয়াটার, লাইনঝিরিসহ ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে লামা পৌর এলাকার ৫ হাজারের অধিক মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh