• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ঈদ বিনোদন দিতে প্রস্তুত সিলেট

রাজ্জাক রুনু, সিলেট

  ২৫ জুন ২০১৭, ১৬:৪৩

ঈদ মানেই আনন্দ, আর ঈদের এই আনন্দ দ্বিগুণ করতে পরিবার নিয়ে অনেকেই আসে বিভিন্ন পর্যটন স্পটে। ঈদে পর্যটক বরণে এরই মধ্যে প্রস্তুত শেষ করেছে সিলেটের পর্যটন স্পটগুলো।

প্রকৃতির সৌন্দর্যে শোভিত অপরূপ এক লীলাভূমি সিলেট। সুদূর প্রাচীনকাল থেকে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের মন কেড়েছে সিলেটের বেশ কিছু পর্যটন কেন্দ্র।
জাফলং, শ্রীপুর, জৈন্তাপুর, লালাখাল, ভোলাগঞ্জ মালনিছড়ার নাম জানে না এমন মানুষ অন্ততপক্ষে বাংলাদেশে খুঁজে পাওয়া খুবই দুরূহ ব্যাপার।

সাম্প্রতিককালে সিলেটে নতুন আরো কিছু পর্যটন স্পট আবিষ্কৃত হয়েছে। এরই মধ্যে স্যাটেলাইট চ্যানেল এবং পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে অনেকেরই এগুলো সম্পর্কে জানা হয়ে গেছে। সম্প্রতি আবিষ্কৃত পর্যটন এলাকাগুলোর মধ্যে রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট সত্যিই বিস্ময়কর! এছাড়া জৈন্তিয়া পাহাড়ের অপরূপ দৃশ্য, জাফলংয়ের মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য, রাতারগুলের জলারবন, পান্তুমাইয়ের ঝরনাধারা, বিছনাকান্দি ও লালাখালের স্বচ্ছ জলের হাতছানি, লোভাছড়ার মন মাতানো সৌন্দর্য আর সারি সারি পাথরের স্তূপ পর্যটকদের টেনে আনে বারবার। তবে ভাঙাচোরা ও খানাখন্দে ভরা রাস্তার বেহাল দশায় পর্যটকদের দুর্ভোগের শঙ্কা কাটছে না কিছুতেই।

এদিকে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এবার স্পটগুলোকে ঘিরে নিরাপত্তার পাশাপাশি নেয়া হয়েছে সতর্কতামুলক ব্যবস্থা।

আরটিভি অনলাইনের পাঠকদের জন্য সিলেটের স্পটগুলো সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্য তুলে ধরা হলো :

জাফলং : দেশের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র জাফলং। জাফলং জিরো পয়েন্টে প্রতিদিন ঢল নামে হাজারো দেশবিদেশী পর্যটকদের। জিরো পয়েন্টে ঝুলন্ত ব্রিজের নিচে নানা রঙের পাথরে চিকচিক করা স্বচ্ছ ও স্নিগ্ধ জলে রাজ হংসের মতো গা ভাসাতে থাকেন পর্যটকরা। এছাড়া উপভোগ করে থাকেন খাসিয়া জৈন্তিয়া পাহাড়ের গায়ে রিমঝিম ছন্দে বহমান মায়াবী ঝর্ণা। বিশাল এ ঝর্ণায় জলকেলিতে যুবক, যুবতী ও নানা বয়সীদের দেখা যায়। তারপর দেখতে পারেন আদিবাসী খাসিয়াদের বসতি সংগ্রাম পুঞ্জি, নকশিয়ার পুঞ্জি ও লামা পুঞ্জি।

মায়াবন : জাফলং থেকে বিছনাকান্দি যাবার পথে আছে ১১শ' ৬০ একর জমি নিয়ে বিস্তৃত দেশের সর্ববৃহৎ জলারবন ‘মায়াবন’। সারিঘাট থেকে বিছনাকান্দির পথে ৮ কিলোমিটার অতিক্রম করার পর দেখা মিলবে লেকের ন্যায় মনোরম ও দৃষ্টিনন্দন বেখরা খাল। বেখরা খাল ধরে পানসি নৌকায় চড়ে ৫ মিনিট সামনে এগোলেই পৌঁছে যাবেন মায়াবনে। ছোট ডিঙ্গি নৌকায় বৈঠা বেয়ে বনের ভেতরে যেতেই কানে আসবে পাখপাখালির কল-কাকলি, জলের কলকল শব্দ। এখানে আছে মাছরাঙ্গা, বিভিন্ন প্রজাতির বক, ঘুঘু, ফিঙ্গে, বালিহাঁস, টুনটুনি, পানকৌড়িসহ নানা প্রজাতির পাখি। বন্য প্রাণীর মধ্যে আছে উদবিড়াল, কাঠবিড়ালি, শিয়াল ইত্যাদি।

বিছানাকান্দি : মায়াবন থেকে যাত্রা শুরুর পর পীরেরবাজার, লামাবাজার ও হাদারপারবাজার ৩টির যেকোনো স্থানে নামতে পারেন। সেখান থেকে ইঞ্জিন চালিত ছোটবড়ো নৌকা দিয়ে ঘণ্টা খানেকের মধ্যে পৌঁছে যাবেন সাত পাহাড়ের মিলন মেলা বিছনাকান্দিতে।

পাংথুমাই : বিছনাকান্দির কাছাকাছি পাংথুমাই এর অবস্থান। পর্যাপ্ত সময় হাতে থাকলেই পাংথুমাই যাওয়ার কথা ভাবা উচিৎ হবে। তা না হলে হয়তো সময়ের টানাপোড়নে কাঙ্ক্ষিত একটি স্পটে যাওয়া বাতিল করতেও হতে পারে।

রাতারগুল : গোয়াইনঘাট উপজেলাতেই রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্টের অবস্থান। এবার বিছানাকান্দি থেকে ফেরার পথে বাংলার দ্বিতীয় সুন্দরবন না দেখলেই নয়। ফিরে আসেন গোয়াইনঘাট, একটু সামনে এসে হাতিরপাড়া-মানিকগঞ্জ সড়ক দিয়ে প্রবেশ করুন রাতারগুলের তীরবর্তী ফতেপুর। একটু সামনে গিয়ে রাতারগুলঘাট থেকে নৌকা করে পৌঁছে যান স্বপ্নের সুন্দরবন রাতারগুল। সিলেট শহর থেকে সিএনজি অটোরিকশা করে যেতে প্রায় ১ ঘণ্টা সময় লাগে। শহরের আম্বরখানা পয়েন্ট থেকে উত্তর দিকে এয়ারপোর্ট রোড হয়ে রাতারগুলের অবস্থান।

এদিকে, পাহাড় ধসের আশঙ্কায় এবার দেশের সর্ববৃহৎ ঝর্না মাধবকুণ্ড জলপ্রভাতে যাবার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। যার ফলে পর্যটকরা মাধবকুণ্ড না গিয়ে মেীলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল, মাধবপুর লেক এবং সিলেটের পর্যটন স্পটগুলোর দিকেই ছুটবেন।

সিলেটের আবাসিক হোটেলগুলোতে কথা বলে জানা গেছে অধিকাংশ হোটেলের রুম আগে থেকেই বুকিং হয়ে গেছে। তবে এখনও বুকিং চলছে কোনো কোনো হোটেলে।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন বলেন, আমরা জনপ্রতিনিধি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথা বলেছি। পর্যটকদের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh