• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

মানিকগঞ্জের বেতিলা-বালিরটেক সড়কজুড়ে খানাখন্দ, জনদুর্ভোগ

জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস, মানিকগঞ্জ

  ১৯ জুন ২০১৭, ১২:০৪

রাজধানী ঢাকা নগরী এবং মানিকগঞ্জ জেলা শহরের সঙ্গে দক্ষিণ মানিকগঞ্জের যোগাযোগের একমাত্র সড়কপথ গাবতলী-বালিরটেক সড়ক। পুরো ১০ কিলোমিটার খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলা থেকে বালিরটেক ফেরিঘাট পর্যন্ত সড়কের অধিকাংশ স্থানের কারপেটিং উঠে গেছে। বিশেষ করে, তেরদোনা মসজিদের সামনে, লেমুবাড়ী নাজিম উদ্দিন মেম্বারের বাড়ির সামনে, কাফাটিয়া বাজার সংলগ্ন সিরাজ মহুরীর বাড়ির সামনে, লেমুবাড়ি, গোকুল নগর, কাফাটিয়া বড় মসজিদের সামনে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

এছাড়া সড়কের অধিকাংশ স্থানেই খানাখন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই সেসব স্থানে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এতে করে যানবাহন চলাচল মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। ফলে এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

রাজধানী ঢাকা থেকে থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক চলাচল ও অত্যন্ত ঝুকিপুর্ণ হয়ে পড়েছে। আর সাইকেল, ভ্যান, টেম্পু বেবি উল্টে যাওয়ার ঘটনা নিত্যদিনের। জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করা না হলে যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা করেছেন এলাকাবাসী।

হাসলী গ্রামের বাসিন্দা কণ্ঠশিল্পী ও সাংবাদিক আবুল বাসার আব্বাসী আরটিভি অনলাইনকে বলেন, রাজধানী ঢাকার সাথে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর, মানিকগঞ্জ সদর, হরিরামপুর, ঢাকার নবাবগঞ্জ ও দোহার উপজেলার হাজারো মানুষ প্রতিদিন বিভিন্ন পরিবহনে যাতায়াত করে। কিন্তু সড়কটির বেতিলা থেকে বালিরটেক ফেরিঘাট পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা জুড়েই খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে সড়কটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বারবার বলেও কোনো লাভ হচ্ছে না। তিনি এই সড়কটির মেরামতের দাবি করেছেন।

স্থানীয় সামিয়া মুদি স্টোরের মালিক বাবুল হোসেন বলেন, এই সড়ক দিয়ে চলাচল করা যায় না। কিন্তু দীর্ঘদিনেও এই সড়কের মেরামত না হওয়ায় এলাকার মানুষ ক্ষিপ্ত।

অ্যাডভোকেট কবির হোসেন বললেন, আমাকে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি থেকে মানিকগঞ্জে যেয়ে কোর্ট করতে হয়। তিনি বলেন, যেহেতু বর্তমান সরকার উন্নয়নমুখী সরকার। সুতরাং জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটির প্রতি কর্তৃপক্ষের দ্রুত নজর দেয়া উচিত।

অগ্রনী ব্যাংক মানিকগঞ্জ শাখার কর্মকর্তা কাফাটিয়া গ্রামের বাদশা মিয়া আরটিভি অনলাইনকে জানান, নিজ জেলায় চাকরি করি বলে প্রতিদিন বাড়ি থেকে যেয়ে অফিস করতে হয়। কিন্তু কাফাটিয়া থেকে বেতিলা পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার সড়কের যে অবস্থা তাতে যানবাহনে উঠতে ভয় হয়। কারণ, যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা সামসুল আলম বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি এখন মানুষ মারার ফাদে পরিণত হয়েছে। জেলা শহরে যেতে এখন ভয় হয়। জনস্বার্থে সড়কটির প্রতি কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া উচিত।

পুটাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কের সংস্কার না হওয়ায় সড়কটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কিছুদিন আগে এলজিইডি'র পক্ষ থেকে ওই সড়কের বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্ট গর্তে ইটের খোয়া দেয়া হয়েছে। এতে কিছুটা কাজ হলেও জনস্বার্থে স্থায়ী মেরামত করা জরুরি।

সম্প্রতি মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম লেমুবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসে বলেন, সড়কটি সংস্কার করা জরুরি।

এ ব্যাপারে তিনি স্থানীয় নেতা-কর্মীদের এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে আলোচনা করে জরুরি ভিত্তিতে দরকারি ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।

এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল বারেক হাওলাদার বলেন, যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে সড়কের বিভিন্ন স্থানে ইট বিছানো হয়েছে। চলতি বছরের জুলাই মাসে এই সড়কের মেরামত কাজের টেন্ডার দেয়া হবে। এ বছরেই কাজ সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশা করেন।

এসজে

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh