• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

হাওর ডুবার কোনো পূর্বাভাসই পায়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড?

হোসাইন তারেক, আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ৩০ এপ্রিল ২০১৭, ১৫:৩০

হাওরে যে হঠাৎ পানির স্রোত বাড়বে বা আগাম বন্যা হবে তার একটুও কি টের পায়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড বা আবহাওয়া অধিদপ্তর? ফসল তোলার সপ্তাহখানেক আগেই পানি আমাদের সব কেড়ে নিলো। আল্লাহ জানে তারা জানতো কিনা। আমরা একটু সময় পেলেই ফসল কেটে ফেলতাম। এমনটাই জানালেন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গোরাঙ্গ বাবু।

তিনি আরটিভি অনলাইনকে বলেন, আমার ৬ কানি জমিতে ধান চাষ করেছি, কিন্তু বন্যার পানিতে সব তলিয়ে গেছে। আমরা এ সময়টার জন্য প্রতি বছর অপেক্ষা করি ঘরে ধান তুলতে। কিন্তু এবার সেটা আর হলো না। সব পানিতে তলিয়ে গেছে।

শাল্লার বাসিন্দা গ্লোব ফার্মাসিকিউটেল এর কর্মকর্তা গোবিন্দ কুমার আরটিভি অনলাইনকে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড সঠিক সময়ে বন্যা মোকাবেলায় কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বাঁধ রক্ষায় কাজ করলে এ দুর্যোগ ঠেকানো যেত।

তিনি বলেন, হাওর এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে বোরো ধান ফলনের ওপর। কিন্তু এবারের আগাম বন্যায় কোনো কৃষক ফসল ঘরে তুলতে পারেনি। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে আগে থেকে পদক্ষেপ নেয়া থাকলে কৃষকদের স্বপ্ন ভঙে যেত না।

সুকান্ত পাল নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, আমরা হাওর এলাকার মানুষ। বছরের ৬ মাস এখানে পানি আর ৬ মাস শুকনা মৌসুম থাকে। বছরের মার্চের দিকে হাওরে পানি আসে। আর পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ রক্ষার কাজ শুরু করে ফেব্রুয়ারিতে। ফলে সঠিক সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় হাওরের এ বিপর্যয়।

তিনি বলেন, হেমন্ত মৌসুমে হাওর থাকে শুকনো। তখন যদি বাঁধ নির্মাণসহ হাওর রক্ষায় দরকারি উদ্যোগ নেয়া হয় তখন এ অবস্থা অনেকটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। আসছে দিনে এমন দুর্যোগ মোকাবেলা করতে শাল্লায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থায়ী অফিস করার দাবি জানান তিনি।

সুকান্ত আরো বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস না থাকায় অনেক সময় জরুরী দরকারে বাধ রক্ষার কাজ সম্ভব হয় না। সুনামগঞ্জ থেকে এখানে আসতে অনেক সময় লাগে। আর সময়মত নৌকা পাওয়া না গেলে শাল্লায় কারো ঢোকা সম্ভব নয়। কারণ এখানে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম নৌকা।

এদিকে অনেক কৃষক পানির দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন তাদের গরু। তারা বলছেন নিজের খাবারের কিছু নেই পশুদের কী খাওয়াবো। আমরা পড়ালেখা কম করেছি এত কিছু বুঝি না। এতোটুকো বুঝি আজকে আমাদের ক্ষতি হয়েছে গুটিকয়েক মানুষের দায়িত্ব পালন না করা। সময়মত বাঁধ দেয়া হলে এই বিপর্যয় ঘটতো না। বিপর্যয় হওয়ার মূল কারণ মানুষের দুর্নীতি।

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর ভারি বৃষ্টিতে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ১৪২টি হাওরের বোরো ধান তলিয়ে গেছে। এতে ২ লাখ ২৩ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমির বোরো ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লাখো কৃষক পরিবার। এছাড়া ধানের গাছ পচে যাওয়ায় কয়েক মেট্রিকটন মাছ এবং কয়েক হাজার হাঁস মারা যায়। অকাল এই বন্যায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়ছেন।

এইচটি/এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
হাওরের পাকা ধান নিয়ে উদ্বিগ্ন কৃষক, শ্রমিক সংকট
বিশ্বের সর্ববৃহৎ আলপনার উদ্বোধন
বিশ্বের দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হচ্ছে হাওরে
জুটি বাঁধলেন হৃদয় খান-ন্যান্সিকন্যা রোদেলা
X
Fresh