বাড়ছে চলনবিলে পানি, তলিয়ে গেছে ফসল (ভিডিও)
নাটোরে অতি বর্ষণ ও বিভিন্ন নদীর পানি বিলসহ নিম্ন এলাকায় ঢুকে পড়ায় হাজার হাজার বিঘার ফসল তলিয়ে গেছে।
চলনবিল এলাকার বিভিন্ন হাট-বাজারে মাইকিং করে ধান কাটতে শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন করা হচ্ছে।
জেলার সিংড়া, গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম ও নলডাঙ্গা এলাকায় অসময়ের ভারী বর্ষণে ওইসব এলাকার ছোট-বড় সব কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। হঠাৎ করে এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে সাধারণ কৃষকরা পাকা ও আধাপাকা ধান কেটে ঘরে তুলতে না পেরে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
এ ব্যাপারে নাটোরের জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন অসময়ের এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতির পরিমাণ নিরুপন করে পুষিয়ে দিতে কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এবং ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের সহায়তা করতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগকে চিঠি দিয়েছেন।
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার দরদমা, বিলশা, পিপলা, হাড়িভাঙ্গা, চাকলবিলে বৃষ্টির পানির জমে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অতি বৃষ্টির কারণে জমিতে পানি আটকে থাকায় আতঙ্কে কৃষক পাকা ধানের পাশাপাশি আধাপাকা ধান কাটতে শুরু করেছে।
একদিকে দ্রুত পানি ঢুকছে অন্যদিকে টাকা দিয়েও শ্রমিক মিলছে না।
বিলশা গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, এলাকায় সর্বনাশ হয়ে গেছে। ধান ডুবার পাশাপাশি লাখ লাখ টাকার পুকুরের মাছও ভেঁসে গেছে। আমরা কি খেয়ে বাঁচবো এখন এই চিন্তায় আছি।
পিপলা গ্রামের বেলাল হোসেন বলেন, তার ৩০ বিঘার প্রজেক্ট। ধান চাষ করতে লোন নিয়েছেন একন কিভাবে পরিশোধ করবেন তাই নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।
তিনি জানান, ধান কাটবো কামলাও মিলছেনা। ভুট্টারও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোজাম্মেল হক বলেন, চলনবিল এলাকায় কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আবার অনেকে আতঙ্কে কাঁচা ধান কাটছে।
তিনি বলেন, অপরিকল্পিত অবৈধ পুকুর খননের কারণে মুলতঃ এই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বড়াইগ্রাম উপজেলায় জালোরা বিল, চিনিডাঙ্গা বিল, ভিটাকাজীপুর বিল ও কচুগাড়িবিল, মাড়িয়া, বাজিতপুর, শ্রীরামপুরসহ বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলে অতি বৃষ্টির পানি জমে এলাকার ফসল ডুবে গেছে। এতে করে বড়াইগ্রামের সহশ্রাধিক জমি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, বড়াইগ্রামে ধানের তেমন ক্ষতি না হলেও পাট, তরমুজ, করল্লা ভুট্টার জমি বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। করল্লা এবং পাটেরর ক্ষেত প্রায় সবটাই পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক জায়গায় কাঁচা-পাকা তরমুজ পানিতে ভাসতে দেকা গেছে।
নলডাঙ্গা উপজেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আশেপাশের জমিতে ঢুকে পড়েছে। ভারী বর্ষণে এই এলাকার হালতিবিলের পানি কয়েক শত বিঘা ফসলী জমিতে পানি ঢুকে পড়েছে। এসব এলাকার কৃষকরা জরুরিভাবে তাদের ধান জমি থেকে কেটে ঘরে তুলতে শুরু করেছেন।
- ত্রাণের চাল কম, প্লাবিত হয়েছে নতুন হাওর (ভিডিও)
- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের ছুটি বাতিল
- প্রধানমন্ত্রী হাওর পরিদর্শনে যাচ্ছেন রোববার
জেএইচ
মন্তব্য করুন