• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

মেঘনায় জোয়ার, বাঁধ ভাঙার শঙ্কায় কৃষকরা

ভৈরব, কিশোরগঞ্জ

  ২৫ এপ্রিল ২০১৭, ০৯:১৭

কিশোরগঞ্জের অধিকাংশ হাওরের ফসলি জমি যখন তলিয়ে। তখনো ভৈরবের জোয়ানশাহী হাওরের কৃষকরা বুকে অদম্য সাহস নিয়ে মেঘনার পানি আটকাতে ও বছরের একটি মাত্র ফসল রক্ষায় মাটির তৈরি বাঁধ তৈরি করছেন। কিন্তু প্রতিনিয়ত উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদীতে অবিরাম পানি বাড়ার কারণে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।

যেকোনো সময় বাঁধ ভেঙ্গে ফসলি জমি তলিয়ে যাবার শঙ্কায় দিন-রাতে এক এক করে বাধঁ পাহারা দিচ্ছেন কৃষকরা। এছাড়া টানা বৃষ্টির কারণে রোববার বাধেঁ ফাটল দেখা দেয়। ফলে স্থানীয়রা মাইকে ঘোষণা দিলে কয়েক শ’ কৃষক বাঁধ রক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়েন।

কৃষকরা জানান, জোয়ানশাহী হাওরে এ বছর বোরো ধানের ভালো ফলন হয়েছে। এ সপ্তাহের শেষদিকে পুরো দমে ধান কাটা শুরু হবে। এরই মধ্যে ব্রি-২৮ জাতের ধান কাটা শুরু হয়েছে। কিন্তু মাত্র ৩০ ফুট প্রস্থের ওরাল খালের কারণে অরক্ষিত হাওরটি।

তারা আরো জানান, মেঘনা নদীতে জোয়ারের পানি বাড়ার ফলে সোনালি ফসল তলিয়ে যাবার শঙ্কায় ভুগছেন তারা। প্রতি বছরই নিজেদের উদ্যোগে মাটি ও প্লাস্টিক বস্তা ফেলে অস্থায়ী বাঁধ তৈরি করেন তারা। এ বছরও একইভাবে বাঁধ তৈরিতে ব্যস্ত তারা।

তাদের দাবি, অতি দ্রুত স্থায়ীভাবে এই সমস্যা সমাধানে একটি স্লুইস গেট তৈরি করতে হবে। নতুবা এ হাওর তাদের ফসল পানি ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

কৃষি অফিস জানায়, উপজেলার শ্রীনগর, আগানগর ও সাদেকপুর ইউনিয়নের ৪ হাজার একর জমি নিয়ে জোয়ানশাহী হাওর। খাদ্য শস্য উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখলেও এখনো উন্নয়নের বাইরে রয়ে গেছে এটি।

কৃষি অফিস আরো জানায়, অনুকূল আবহাওয়া থাকলে অন্য যেকোনো হাওর থেকে এই অঞ্চলে একর প্রতি ধানের আবাদ অনেক বেশি ও ফলন ভালো হয়। কিন্তু অধিকাংশ সময় কৃষকরা তাদের আবাদকৃত ধানের ৭৫ শতাংশ ধানই গোলায় তুলতে পারে না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জালাল উদ্দিন বলেন, সব সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও দরকারি কিছু পদক্ষেপের অভাবে হাওরটিকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনা যাচ্ছে না। আমি সরেজমিনে হাওরটি দেখে এসেছি। উজানের পানিতে বাঁধ ভেঙ্গে ফসল ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে সব সময় এমন শঙ্কায় থাকেন কৃষকরা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলরুবা আহমেদ জানান, মেঘনা নদীর প্রবেশমুখ হচ্ছে ওরাল হাওর। এখানে একটি স্লুইস গেট নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট বিষয়টি অবগত করেছি।

অচিরেই এখানে একটি স্লুইস গেট তৈরি করা হবে বলেও আশা জানান তিনি।

এদিকে, অকাল বন্যায় কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলের কয়েক লাখ হেক্টর জমির বোরো ধান তলিয়ে গেছে।

কে/জেএইচ

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh