• ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
logo

তলিয়ে গেছে কিশোরগঞ্জের হাওর, কৃষকের মাঝে হাহাকার

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ০৫ এপ্রিল ২০১৭, ১৭:৫৮

বৃষ্টি আর উজানের পানিতে তলিয়ে গেছে কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চলের অন্তত ১৫ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান। বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গেছে ফসলরক্ষা বাঁধ। এই অবস্থা নেত্রকোরার হাওরাঞ্চলেও।

এসব হাওরের অনেক বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে ফসল। দুই জেলাতেই হাহাকার নেমেছে কৃষকদের মাঝে। দাবি উঠেছে দুর্গত এলাকা ঘোষণার।

ধানের শীষে হাওরজুড়ে খেলা করছিল সোনালী রঙ। বৈশাখে ধান কাটার স্বপ্ন দেখছিলেন কৃষক। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে কৃষকের স্বপ্নের ধান।

অনেক কৃষক আধাপাকা ধান কোনোরকমে কাটতে বাধ্য হচ্ছেন। কিন্তু বৃষ্টির কারণে এগুলো শুকানো যাচ্ছে না।

প্রতিদিনই বাড়ছে পানি, তলিয়ে যাচ্ছে নতুন নতুন ধানক্ষেত। কয়েক দিন আগেও যেখানে আধাপাকা ধান ক্ষেত দেখা যেতো, সেখানে এখন পানি আর পানি।

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম, ইটনা ও মিঠামইন এলাকার সব হাওরের এখন একই চিত্র। অসময়ের বৃষ্টি আর ঢলে তলিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার হেক্টর ক্ষেতের ফসল। এ বিপর্যয়ে দিশেহারা সেখানকার কয়েক হাজার কৃষক।

সরেজমিনে দেখা গেছে আদমপুর, কেওয়ারজোর, কাটকাখাল, আব্দুল্লাপুর, ঘাগড়া, বৈরাটি, জয়সিদ্ধি ও বৈরাটি হাওরে প্রতিদিনই বাড়ছে পানি। ভেঙে গেছে হাওর রক্ষাবাঁধ। তলিয়ে গেছে কাঁচা ও আধাপাকা বোরো ধান ক্ষেত।

এ অঞ্চলে শতভাগ ফসল হারানোর শঙ্কায় কৃষকেরা কাঁচা ও আধাপাকা বোরো ধান কাটা শুরু করেছেন। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না।

কৃষকরা জানান, ধার-দেনা ও ঋণ করে টাকা এনে চাষাবাদ করেছিলেন। কথা ছিল ফসল ওঠার পর সেই দেনা পরিশোধ করবেন। কিন্তু সোনার ফসল তলিয়ে যাওয়ায়, একদিকে বেড়েছে ঋণের বোঝা, অন্যদিকে দেখা দিয়েছে খাদ্যে তীব্র সংকট।

চাষীরা জানান, ভরাট হয়ে যাওয়ায় আগের মতো বৃষ্টি ও উজানের ঢলের পানি ধারণ করতে পারে না নদীগুলো। স্থায়ীভাবে নদী খনন ও আরো বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি তাদের।

বছরে একটি মাত্র বোরো ধান। এর ওপরই নির্ভর করে চলতে হয় হাওরের চাষীদের। এ ফসল সঠিকভাবে ঘরে তোলতে না পারলে বেড়ে যায় তাদের ঋণের বোঝা। অতিকষ্টে কাটাতে হয় পরিবার পরিজন নিয়ে। এ অবস্থায় জরুরি সাহায্যের দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।

হাওর অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানিয়ে জরুরি সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক।

তিনি জেলার হাওরবেষ্টিত উপজেলা এলাকা ঘুরে কৃষকদের পাশে খোঁজখবর নিচ্ছেন।

সংসদ সদস্য তৌফিক জানান, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাদের সহায়তার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে, টানা বর্ষন আর পাহাড়ী ঢলে নেত্রকোনার হাইজদ্যা ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে তলিয়ে গেছ, বোরো ধানের কয়েক হাজার হেক্টর জমি। একমাত্র ফসল নষ্ট হওয়ায়, দিশেহারা হয়ে পড়েছেন হাওরাঞ্চলের কৃষক। দ্রুত স্থায়ী বেড়ি বাঁধ নির্মাণের দাবি তাদের। একই অবস্থা সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জের হাওরের। সেখানেও তলিয়ে গেছে বোরো ধানক্ষেত।

জেএইচ

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh