'বৃষ্টিতে শওনের জায়গা নাই, পুরা রাইত খাড়াইয়া কাডাইলাম'
'ফুটপাতেই ঘুমাই। মাঝরাইতে হঠাৎ বৃষ্টি আইলো। মিনিটেই বিছান ভিইজা গেলগা! প্রজাপতি গুহার দিকে দৌঁড়াইলাম। দেখি, মেলা লোক। শওনের জায়গা নাই। কি আর করুম। পুরা রাইত খাড়াইয়া কাডাইলাম। পলিথিনও নাই যে কোথাও টাঙামু।'
এভাবেই নিজের দুর্ভোগের কথা বলছিলেন কাওরান বাজারের ছিন্নমূল মানুষ শরিয়তউল্লাহ।
তিনি জানান, তার সঙ্গে আরো অনেকেই ঘুমান। প্রতিদিন একটু স্বস্তিতে ঘুমালেও বৃষ্টিতে তারা বিপদে পড়ে যান। যারা প্রতিদিন হকারি করেন কিংবা বাজারে কুলির কাজ করেন। অনেকেই ভিক্ষা করেন। রিকশাও চালান কেউ কেউ।
তাদের অনেকের শেষ আশ্রয়স্থল ফুটপাত, ফুটওভার ব্রিজ, যাত্রী ছাউনি, রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট বা বাজার। হেমন্তের হঠাৎ বৃষ্টিতে একটু ঘুমানোর আশায় প্রহর গুনছেন তারা!
কাওরান বাজারের টিসিবি অফিসের সামনে রিকশা চালক কামাল হোসেন। রাতেও ভিজেছেন। শুক্রবার দিনভরও ভিজেছেন।
তিনি জানালেন, 'ঢাকায় রাতে দিনে রিকশা চালাই। এখনো থাকার জায়গা নাই। এক জায়গায় ২ দিন ছিলাম। ওখানে এখন আর থাকার সুযোগ নেই। পরশু থেকে ফুটপাতে ঘুমাই। আইজ ঘুমাইতে পারি নাই। সারারাত জাইগা ছিলাম।'
শুক্রবার সন্ধ্যার পরে কাওরান বাজার এলাকা সরেজমিনে এসব ছিন্নমূল মানুষগুলোকে অনেকটা চিন্তিত অবস্থায় দেখা গেছে। কেউ কেউ পলিথিন মাথায় দিয়ে বিভিন্ন ভবনের নিচে অবস্থান করছিলেন। কেউবা ভেজা ফ্লোরের ওপর পলিথিন বিছিয়ে শোয়ার চেষ্টা করছিলেন।
আল আরাফাহ ব্যাংকের সামনের ফুটপাতে প্রতিদিন ঘুমান আব্দুল্লাহ। শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি ঘুমানোর জায়গা খুঁজছিলেন।
তিনি বলেন, কাইল থাইক্যা খুব কষ্টে আছি। শওনেরও জায়গা নাই। যাওনেরও জায়গা নাই। যে কয়টা বারান্দা ছিল সবগুলায় মেলা লোক। গার্ডরা শুইতে দ্যায় না। কি করুম বুঝতাসি না। শরীরও চলেনা।'
এসজে
মন্তব্য করুন