• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

পরিবেশ দূষণ : বাংলাদেশের সঙ্গে সড়কপথ থেকে সরে যাচ্ছে ভুটান!

নিউজ ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ০২ ডিসেম্বর ২০১৬, ২১:০৭

বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালের (বিবিআইএন) মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে পণ্যবাহী গাড়ি, যাত্রীবাহী বাস ও ব্যক্তিগত মোটরযান চলাচলের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে অনেকদিন আগেই। আসছে জানুয়ারি থেকে অবাধে গাড়ি চলারও কথা ছিল। কিন্তু সেই যাত্রায় হঠাৎ বাগড়া বসিয়েছে ছোট্ট দেশ ভুটান। সম্প্রতি দেশটির সংসদ সোংডুর উচ্চকক্ষে চুক্তিটি পেশ করা হয়েছিল অনুমোদনের জন্য। দীর্ঘ আলোচনার পর হয় ভোটাভুটি। ২০ সদস্যের মধ্যে এর পক্ষে ভোট পড়ে মাত্র দু’টি! এ চুক্তির বিপক্ষে ভোট দেন ১৩ জন। আর অনুপস্থিত ছিলেন ৫ জন সাংসদ।

এখন ভুটান ছাড়পত্র না দিলে এ চুক্তি অচল। অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক বিকাশে ৪ দেশের নিরবিচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগে এখন জগদ্দল পাথর। তাই এ সড়ক যাত্রার চুক্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ, ভারত ও নেপাল। এ চুক্তি কার্যকর করার আর কোনো রাস্তাও নেই। এনটাই জানিয়েছে কলকাতার সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার।

চুক্তিটির বিরোধিতা করে ভুটানের সাংসদরা বলছেন, পাহাড়ি রাস্তায় দিনরাতে হাজার হাজার ট্রাকের গর্জনে কান পাতা দায় হবে। শান্তিতে মানুষ ঘুমোতেও পারবে না। পোড়া ডিজেলের ধোঁয়ায় শরীরে বিষ ঢুকবে। তাই অর্থনৈতিক বিকাশের কথা ভেবে দেশকে বিনাশের পথে নিয়ে যাওয়া যায় না।

পরিবেশ নিয়ে ভুটানের ভাবনা অবশ্য একটু বেশিই। কারণ বিশ্বের একমাত্র ‘কার্বন সিংক’ রাষ্ট্র ভুটান। দেশটি যতো কার্বন ডাই অক্সাইড বাতাসে ছাড়ে তার থেকে বেশি গ্রহণ করে। এতে বাতাসের শুদ্ধতাও বজায় থাকে। বিদ্যুৎ উৎপাদনেও দেশটি অনেক সতর্ক। জলবিদ্যুৎ ছাড়া আর কিছুই ভাবতে চায় না তারা। উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ রপ্তানিও করে ভুটান। এমনকি রাজধানী থিম্পু যাতে অতিরিক্ত চাপে নাভিশ্বাস না তুলে তার জন্য প্রশাসনিক রাজধানী করা হয়েছে পারো ডংয়ে। এতসব চিন্তা করেই এ চুক্তির বিরোধিতা করছেন সাংসদরা।

ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোগবে অবশ্য মনে করেন, পরিবেশ বাঁচিয়ে যান চলাচলে বাধা থাকার কথা নয়। ভুটানের উন্নয়নের জন্য সেটা দরকার। যোগাযোগ না বাড়ালে অর্থনৈতিক বিকাশই বা কীভাবে সম্ভব? তাই হয়তো রাজা জিগমে খেসর নামসিয়ান ওয়াংচুকের সঙ্গে পরামর্শ করেই তিনি এ চুক্তিতে আসবেন।

বর্তমানে সড়কপথে নেপাল বা ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি যোগাযোগ নেই। তবে সীমান্তে গাড়ি বদলে ভারত হয়ে নেপাল বা ভুটানে যাওয়া যায়। বাংলাদেশে ভুটানের রুট হবার কথা দু’টো। একটি ভুটানের সামদ্রুপ জংখার থেকে ভারতের গুয়াহাটি-শিলং এবং বাংলাদেশের সিলেটের তামাবিল সীমান্ত হয়ে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত। অন্যটি হলো ভুটানের রাজধানী থিম্পু থেকে ফুয়েন্টশোলিং ও ভারতের জাইগাঁও হয়ে বাংলাদেশের বুড়িমারী স্থলবন্দর হয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কিংবা মংলা বন্দর পর্যন্ত। আর বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে একমাত্র রুটটি কাঠমান্ডু থেকে কাঁকরভিটা হয়ে ভারতের বুক ছিঁড়ে ফুলবাড়ী দিয়ে ঢুকে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে চট্টগ্রাম বন্দর বা মংলা বন্দর পর্যন্ত।

অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের রুট তিনটি। এর মধ্যে প্রথমেই গুরুত্ব পাচ্ছে কলকাতা থেকে পেট্রাপোল; বাংলাদেশের বেনাপোল, ঢাকা ও আখাউড়া হয়ে ভারতের আগরতলা রুট। দ্বিতীয় রুট হলো ভারতের আগরতলা থেকে বাংলাদেশের আখাউড়া হয়ে চট্টগ্রাম বন্দর। তৃতীয় রুটটি হলো ভারতের শিলচর থেকে বাংলাদেশের সিলেটের সুতারকান্দি দিয়ে বেনাপোল হয়ে কলকাতা।

এ চুক্তিতে পাকিস্তানেরও থাকার কথা ছিল। প্রথমে এগিয়ে এসেও পরে পিছিয়ে যায় দেশটি। এর কারণও জানায়নি তারা। ইসলামাবাদে সার্ক সম্মেলন বাতিল হবার পর পাকিস্তান আরও বিচ্ছিন্ন।

এস

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh