• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

জয় এমআইটিতে পড়ার সুযোগ পেলেও আমি টাকা দিতে পারিনি: প্রধানমন্ত্রী

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ২৯ জুন ২০১৮, ২০:০৩

সজীব ওয়াজেদ জয় এমআইটিতে (ম্যাসাচুসেট্‌স ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি) পড়ার সুযোগ পেলেও আমি তার শিক্ষার খরচের টাকা দিতে পারিনি। যখন এমআইটিতে দিতে পারলাম না। আমি প্রধানমন্ত্রী, আমার দ্বিধা হল, কাকে বলব টাকা দিতে বা কীভাবে আমি টাকা পাঠাব, বুঝতে পারিনি। কার কাছে দেনা করবো? আমার কারণে তার পড়া হলো না। দুটো সেমিস্টার করে তাকে বিদায় নিতে হলো। তারপর সে চাকরিতে ঢুকলো।

বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার জাতীয় সংসদে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা পড়াশুনা করেছে, চাকরি করছে। পড়ার মাঝে গ্যাপ দিয়ে চাকরি করে আবার পড়াশুনা করেছে। একবার গ্রাজুয়েশন হয়েছে, কিছু দিন চাকরি করেছে, স্টুডেন্ট লোন নিয়েছে, সেটা শোধ দিয়েছে আবার ভর্তি হয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি করেছে। আবার সেই লোন শোধ দিয়েছে। এইভাবে পড়েছে। পড়াশুনা করা অবস্থায়ও ঘণ্টা হিসেবে কাজ করেছে, পার ঘণ্টা একটা ডলার পেত, সেটা দিয়ে তারা চলত।

শেখ হাসিনা বলেন, আব্বার বন্ধু আমার ছেলে-মেয়েদের পড়াশুনার সব দায়িত্ব নিয়েছিলেন। উনি বলতেন, তুমি পলিটিক্স করো এটা আমার ওপর ছেড়ে দাও। তিনি না থাকলে আমি পড়াতে পারতাম না। এমনকি মিশনারি স্কুলে তারা পড়েছে। সাত দিনই সবজি বা ডালভাত খেতে হত, একদিন শুধু মাংস খেতে পারত। এভাবে কৃচ্ছ সাধন করে এরা বড় হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৭ সালে বউমা অসুস্থ হলে দেখতে গেলাম। তখন তাকে অনুরোধ করলাম। কারণ আমার ভেতরে এই জিনিসটা খুব কষ্ট লাগত যে, আমি প্রধানমন্ত্রী হলেও তার পড়ার খরচ দিতে পারিনি। তখন আমি বললাম, তুমি হার্ভার্ডে আবেদন করো। আমি অনুরোধ করার পর সত্যি সে আবেদন করল। সুযোগও পেয়ে গেলো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি কথা দিয়েছিলাম, ফার্স্ট সেমিস্টারের টাকা আমি দেব। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার আগে গ্রেপ্তার হয়ে গেলাম। তবে আমি চেয়েছিলাম, চান্স যখন পেয়েছে যেভাবে পারুক চালাক। পরে বাড়ি ছেড়ে দিয়ে তা ভাড়া দিয়ে সেই ভাড়ার টাকা দিয়ে, কলেজ থেকে দূরে বাসা নিল যাতে সস্তায় বাসা পায়, গাড়ি রেখে মটরসাইকেল চালিয়ে সে আসত।

তিনি বলেন, রেহানার মেয়ে অক্সফোর্ডে চান্স পেয়েছে। সে পড়াশুনা করল স্টুডেন্ট লোন নিয়ে। তারপর পড়াশুনা শেষে চাকরি করে লোন শোধ দিল, সে ২১ বছর বয়স থেকে চাকরি করে। কয়েক বছর চাকরি করার পর সে মাস্টার্স ডিগ্রি করে আবার চাকরি করল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা পৃথিবীর সব থেকে অল্প খরচে লেখাপড়া শিখেছে। এত অল্প খরচে পৃথিবীতে কেউ লেখাপড়া করতে পারে না। আমাদের দেশে যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকে, তাদের সিট ভাড়া কত? তাদের খাবার টাকা কত? পড়াশুনার ফিস কত? কয় টাকা খরচ করে? বলতে গেলে একেবারে বিনা পয়সায় আমরা পড়াই। তারপরও তারা যদি রাস্তায় নামে, ভিসির বাড়ি ভাংচুর করে, লুটপাট করে- এর থেকে লজ্জার কী হতে পারে?

তিনি বলেন, আমি বলেছি কোটা থাকবে না। এখন এই থাকবে ‘না’ টা কীভাবে কার্যকর করা যায় তার জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে, যাতে করে এটা বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।

এরপর যদি মফস্বলের কেউ চাকরি না পায় তার জন্য কিন্তু আমাদের দায়ী করতে পারবে না।

এসজে/ এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু
X
Fresh