• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

মানবতাবিরোধী অপরাধ

হবিগঞ্জের গোলাপ মিয়াসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে ৫ অভিযোগ

লআরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ১৩ মে ২০১৮, ১৭:৪৯

মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার গজানাইপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল খায়ের গোলাপ মিয়াসহ তিন জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ৫ টি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।

এসব অভিযোগ আমলে নেয়া হবে কি না-এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ৪ জুন তারিখ ঠিক করা হয়েছে।

তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ এলাকায় গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণের অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।

আজ (রোববার) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন।

প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন।

গেল ৮ মার্চ গোলাপ মিয়াসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। মামলার অন্য দুই আসামি হলেন-মো. জামাল উদ্দিন আহম্মদ ওরফে মো. জামাল উদ্দিন (৬৫) ও শেখ গিয়াস উদ্দীন আহমদ (৭০)। তিন আসামিদের মধ্যে গোলাপ মিয়াকে গেলো বছরের ১২ এপ্রিল এবং জামাল উদ্দিনকে ২৩ নভেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়। গিয়াস উদ্দিন পলাতক রয়েছেন।

তদন্ত সংস্থার জানায়, এ মামলাটির তদন্ত শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি এবং শেষ হয় ৮ মার্চ। তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ এলাকায় গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণের অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ জনকে হত্যা, ৬ নারীকে ধর্ষণ, ২৫টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ৩০ জনকে অপহরণ-নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। পাঁচটি অভিযোগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ (আইও) এ মামলার মোট সাক্ষী ২৩ জন।

পাঁচ অভিযোগের মধ্যে প্রথমটিতে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ৯ নভেম্বর ভোর ৫টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত আসামি আবুল খায়ের গোলাপ মিয়া ও মো. জামাল উদ্দিন আহম্মেদ ২০/২৫ জন পাকিস্তানি আর্মি নিয়ে নবীগঞ্জ থানার মামদপুর হিন্দু পাড়া ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিন বাবু রায়কে হত্যা করে। এদিন আসামিরা গৌরী রাণীসহ মোট ১০ জনকে আটক ও অপহরণ করে দিনারপুর আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করে। এদের মধ্যে হিন্দু ধর্মাবলম্বী চার জনকে হত্যা করে। এ অভিযানে দুই নারীকে পাকিস্তানি আর্মিরা ধর্ষণ করে। রাজাকাররা লোকজনের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে।

দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে- ১৯৭১ সালের ১০ নভেম্বর ভোর ৫টায় আসামি আবুল খায়ের গোলাপ মিয়া অন্য রাজাকার ও কয়েকজন পাকিস্তানি আর্মি নিয়ে নবীগঞ্জের কান্দিরগাও গ্রামে অভিযান চালিয়ে দরছ মিয়াকে তার বাড়ি থেকে অপহরণ করে দিনারপুর আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। তারা দরছ মিয়ার বসতঘর পুড়িয়ে দেয়। তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে- ১৯৭১ সালের ১০ নভেম্বর সকাল ৮টার দিকে আসামি আবুল খায়ের গোলাপ মিয়া অন্য রাজাকার ও কয়েকজন পাকিস্তানি আর্মিকে সঙ্গে নিয়ে নবীগঞ্জের দেওপাড়া গ্রামে হিন্দু পাড়ায় অভিযান চালিয়ে নিরাই নমশুদ্রসহ হিন্দু ধর্মাবলম্বী তিন জনকে অপহরণ করে আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে।

চতুর্থ অভিযোগে বলা হয়েছে- ১৯৭১ সালের ১১ নভেম্বর ভোর ৫টার দিকে আসামি শেখ গিয়াস উদ্দীন আহমদ অন্য রাজাকার ও কয়েকজন পাকআর্মি নিয়ে নবীগঞ্জের বনগাঁও গ্রামে অভিযান চালিয়ে জহুর উদ্দিন, জনূ উল্লাহ ও দেওয়ান মামুন চৌধুরীকে অপহরণ করে আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করে। পরে অর্থের বিনিময়ে জহুর উদ্দিন ও দেওয়ান মামুন চৌধুরী মুক্তি পেলেও জনূ উল্লাহকে আসামি আবুল খায়ের গোলাপ গুলি করে হত্যা করে। এ অভিযানের সময় জহুর উদ্দিনের মা ও এক বোন পাক-আর্মিদের হাতে ধর্ষণের শিকার হন।

পঞ্চম অভিযোগে বলা হয়েছে-১৯৭১ সালের ১২ নভেম্বর বিকেল ৪টার দিকে আসামি আবুল খায়ের গোলাপ মিয়া ও মো. জামাল উদ্দিন আহম্মেদ একদল পাকিস্তানি আর্মি নিয়ে নবীগঞ্জের লোগাঁও গ্রামে অভিযান চালিয়ে দুই নারীকে ধর্ষণ করে এবং অগ্নিসংযোগ করে কয়েকটি বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়।

জেএইচ

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh