• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

জলাবদ্ধতা প্রকটে, বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে রাজধানী

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ২৯ এপ্রিল ২০১৮, ১৪:৫৮

রাজধানীতে সকাল বেলায় ধূসর ভারী মেঘ। আকাশ ভেঙে নামে বৃষ্টি। কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে কয়েক ঘণ্টার বর্ষণে জল জমেছে রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায়, ফলে ছুটির দিনেও বিভিন্ন সড়কে তৈরি হয়েছে যানজট।

সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকায় বৃষ্টিপাত হয় ৫০ মিলিমিটার। এরপর থেকেই সকালে ভাসছে রাজধানী। প্রধান সড়কে কোথাও হাঁটু, কোথাও কোমর সমান পানি। পাড়া-মহল্লার সড়কে কাদা-পানি একাকার। রোববার সকাল থেকে রাজধানীতে এমন চিত্রই ছিল সর্বত্র। বর্ষা না আসতে আসতে রাজধানীর এমন চিত্রতে হতাশ নগরবাসী।

তাদের অভিযোগ, সব সময় এমন চিত্র দেখা যায়। বিশেষ করে বৃষ্টি হলেই দুর্ভোগ বাড়ে। সংশ্লিষ্টদের কারো কোনো মাথা ব্যথা নেই। এভাবে চলতে থাকলে ঢাকা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে।

রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায়, জলমগ্ন হয়ে পড়েছে রাজধানীর সড়ক, অলিগলি। ড্রেন-নালা একাকার হয়ে রাজধানী রূপ নেয় এক পানির নগরে। থই থই পানিতে অনেক জায়গায় যানবাহন আটকে যাওয়ায় নগর-জুড়ে তৈরি হয় যানজট। বৃষ্টি আর পানির কারণে যানবাহন না পেয়ে রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কেটেছে মানুষের।

--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : আজ রাতে দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী
--------------------------------------------------------

বৃষ্টির পানিতে জাতীয় সংসদের পাশের মানিক মিয়া এভিনিউ, ধানমন্ডি-২৭, সচিবালয়ের ভেতরের রাস্তায় ছিল হাঁটুপানি। ব্যাংকপাড়া মতিঝিলে কোথাও ছিল কোমর পানি। পানি ডিঙিয়ে ওই এলাকায় ছোট যানবাহন চলাচল করতে পারেনি। আর গণপরিবহনগুলো এক সারি হয়ে চলেছে কচ্ছপগতিতে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ আরটিভি অনলাইনকে বলেন, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকায় প্রায় ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। যার বাতাসের গতিবেগ ছিল ৬৩ কিলোমিটার।

তিনি জানান, ঢাকাতে বৃষ্টিতে হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে দেশের বেশ কয়েকটি স্থানেও স্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া ও বিজলী চমকানোসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

এদিকে সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে আরও দেখা গেছে মানুষের দুর্ভোগের চিত্র। বৃষ্টির কারণে রাজধানীর মৌচাক, মালিবাগ, শান্তিনগর, কাকরাইল, মগবাজার, কাঁঠালবাগান, রাজারবাগ, কাওরান বাজার, ধানমন্ডি, আসাদগেট, শ্যামলী, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, খিলগাঁও, রামপুরা, বাড্ডা, যাত্রাবাড়ী, মতিঝিল, পল্টন, মতিঝিলসহ পুরান ঢাকার বেশকিছু এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

কাওরান বাজারে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী আরিফ হোসেনের সঙ্গে। অনেকটা ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরটিভি অনলাইনকে বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই। ঢাকা শহরে তো নৌকা নিয়ে চলতে হবে। জলাবদ্ধতার প্রকটে বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে রাজধানী।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা তানিয়া জেসমিন আরটিভি অনলাইনকে বলেন, রাস্তায় অনেক পানি। ভাঙা ড্রেনে পড়ে ব্যথা পেতে দেখেছি কয়েকজনকে। মানুষের এ কষ্ট দেখবে কে?

মালিবাগের বাসিন্দা শাহিনুর রহমান আরটিভি অনলাইনকে বলেন, পানিতে সড়ক আর ফুটপাথ একাকার। হেঁটে সড়কে চলতে গিয়ে নালায় পড়ে আহত হন তিনি। তিনি বলেন, শহরের অবস্থা দিন দিন খুবই খারাপ হচ্ছে। আর কিছুদিন পর এটা বাসযোগ্য শহর থাকবে না। সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা হয়।

এদিকে জলাবদ্ধতার কারণে কাঁঠালবাগানের ভুতের গলির চার রাস্তার মোড়, গ্রিন রোড, ভুতের গলি মেহেরুননেসা স্কুলের সামনে এলাকায় পানি বন্দি হয়ে পড়েন এলাকার হাজারো পরিবার।

দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, তাদের ঘরে পানি উঠে গেছে। রান্না-বান্না বন্ধ। পানির কারণে শৌচাগারেও যেতে পারছেন না তারা। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে তাদেরকে।

ওই এলাকার বাসিন্দা কামরুল ইসলাম আরটিভি অনলাইনকে বলেন, বৃষ্টি হলেই পানি উঠে যায়। অনেক সমস্যার মধ্যে আছি। কোথাও যাওয়া যাচ্ছে না পানির কারণে। খুব কষ্ট হচ্ছে।

ধানমন্ডি ২৭ নম্বরের রাপা প্লাজা থেকে ৩২ নম্বর পর্যন্ত পুরো রাস্তাটি পানিতে তলিয়ে ছিল দিনভর। সকাল থেকে এখানে আসা চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী এমনকি বিভিন্ন পেশার মানুষরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।

এদিকে সারাদিনের জলাবদ্ধতা ও যানজটে ভোগান্তির শিকার হওয়া রাজপথের মানুষগুলো আরও দুর্ভোগে পড়েন নির্দিষ্ট সময়ে গাড়ি না পেয়ে। গণপরিবহন কম থাকায় সুযোগ নেয় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকরা। ফার্মগেট থেকে ধানমন্ডি যাওয়ার ভাড়া ৩০০ টাকারও বেশি হাঁকিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বেশকজন যাত্রী। এমন চিত্র পুরো শহরজুড়েই ছিল।

আরও পড়ুন :

এমসি/এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা ও যানজট, ভোগান্তিতে রাজধানীবাসী
নারায়ণগঞ্জে জলাবদ্ধতা নিরসনে এলাকাবাসীর মানববন্ধন 
X
Fresh