বাংলাদেশের মানুষের দুঃখ বাড়ছে
বিশ্বে সবচেয়ে সুখী দেশের তালিকায় ৫ ধাপ অবনমনের ফলে ১১৫তম অবস্থানে এখন বাংলাদেশ।
মাথাপিছু আয়, সুস্থভাবে বেঁচে থাকার আয়ু, সামাজিক সহায়তা, উদারতা ও দুর্নীতির ভিত্তিতে এই তালিকা তৈরি করেছে জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশন নেটওয়ার্ক।
২০১২ সাল থেকে সুখী দেশের এই তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তখন থেকে গত ছয় বছরে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৮ থেকে ১১০ এর মধ্যেই ছিল। কিন্তু এবার নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ।
সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের সুখের চাহিদার পরিবর্তন হয়। ১০ বছর আগে যে বিষয়গুলো বাংলাদেশের মানুষকে সুখী করতে পারতো, এখন হয়তো সেগুলো আর পারছে না। এখন সুখের জন্য আরও নতুন উপকরণ যুক্ত হয়েছে।
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন: রিমান্ড শেষে ফয়জুলের বাবা-মামা কারাগারে
--------------------------------------------------------
তাদের মতে সুখের নির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা নেই। তবে এর দুটি দিক আছে। একটি মানসিক আরেকটি সামাজিক। এখন প্রশ্ন উঠছে বাংলাদেশের মানুষ কি দিন দিন অসুখী হয়ে উঠছে?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক শাহ এহসান হাবিব মনে করেন, বাংলাদেশের মানুষের চাওয়া এবং পাওয়ার মধ্যে যে এক ধরনের ফারাক তৈরি হচ্ছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। প্রযুক্তির বিকাশের কারণেই এই অবস্থা তৈরি হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রযুক্তির বিকাশের কারণে বাংলাদেশের মানুষ এখন নিজেকে অন্যের সঙ্গে তুলনা করতে শিখেছে। ফলে অনেক সময় তাদের মনে এক ধরনের হতাশারও তৈরি হচ্ছে। তারা জানতে পারছে অন্যরা কী পাচ্ছে আর আমরা কী পাচ্ছি?
অধ্যাপক শাহ এহসান হাবিব বলেন, বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্তের যে কারও কাছে কেমন আছেন জানতে চাইলে তাদের উত্তর পাওয়া যাবে, ‘ভালো আছি’। এ ভালো মানে আসল ভালো নয়। এটা হচ্ছে সামাজিকভাবে কথা বলার একটি ধরন।
তিনি বলেন, মানুষ সাধারণত নিজের নেতিবাচক বিষয়গুলো সবার সঙ্গে শেয়ার করতে চায় না। নিজেকে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরতেই সবাই বলে, ভালো আছি।
সাধারণত বাংলাদেশের মানুষের সহ্যশক্তি অনেক বেশি দাবি করে এই সমাজবিজ্ঞানী বলেন, আর্থিক মানদণ্ডের চেয়েও তাদের কাছে বড় বিষয় হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, শিক্ষা, চিকিৎসার সুযোগ।
অধ্যাপক হাবিব বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাকস্বাধীনতা এবং ব্যক্তিস্বাধীনতার মতো বিষয়গুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। যার অর্থনৈতিক ভিত্তি ভালো, তার কাছে বাকস্বাধীনতা এবং ব্যক্তিস্বাধীনতার মতো বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, উচ্চবিত্তের চাহিদা একরকম, মধ্যবিত্তের বা নিম্নবিত্তের চাহিদা আরেক রকম। সুতরাং সুখের একটি শ্রেণি-চরিত্র আছে।
উল্লেখ্য, এই তালিকায় সবচেয়ে সুখী দেশ ফিনল্যান্ড এবং সবচেয়ে কম সুখী দেশ বুরুন্ডি।
আরও পড়ুন:
কে/এমকে
মন্তব্য করুন