‘সেলফি তুলেন, মইরা গেলে স্ট্যাটাস দিতে পারবেন’
নেপালে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানলেন কাঠমান্ডুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বৈশাখী টেলিভিশনের সাংবাদিক ফয়সাল সরদার।
আওয়ামী লীগ বিটের সাংবাদিক মুহম্মদ আকবর মঙ্গলবার দুপুরে ফয়সালের সঙ্গে তোলা ছবি শেয়ার দিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন- ‘৯ মার্চ পিকনিকে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন ভাই পিকনিকে যোগদানের পর বললাম, ভাই আসেন একটা সেলফি তুলি। ফয়সাল ভাই রসিকতা করে বললেন, তুলেন। মইরা টইরা গেলে অন্তত একটা স্ট্যাটাস দিতে পারবেন। এরপর বললেন, ভাই মোবাইলটা ওইভাবে ধরেন তাহলে ফ্রেমটা ভাল আসবে। তার কথামতো সেলফি ওঠানো হলো। এরপর লটারিতে ফার্স্ট পুরস্কার পাওয়ার পর সে কী উচ্ছ্বাস! থিয়েটার করে, নাটক নির্মাণের কাজ করে অতঃপর এলেন রিপোর্টিংয়ে। নিজেকে দ্রুত ডেভেলপ করে কাজ করছিলেন পিএম বিটে। আহা রে! খোদার কী বিচার! এই তাজা প্রাণটাকেই ছিনিয়ে নিতে হলো। কী ভেবে সান্ত্বনা পাবে তার পরিবারের লোকজন! বিশ্বাস হয় না ফয়সাল ভাই! এটা বিশ্বাস করার মতো খবর নয়!’
আরেক সাবেক সহকর্মী আওয়ামী লীগ বিটের রিপোর্টার শাহনাজ পারভিন এলিস লিখেছেন-‘নেপালে বিমান বিধ্বস্ত! বিকেলে জানলাম ইউএস বাংলার সেই বিমানের যাত্রী ছিল বৈশাখী টিভির সহকর্মী ভাই...ফয়সাল? বার বার মন বলছিলো খবরটি যেন মিথ্যা হয়। কিন্তু রাতে...(১২ মার্চ) নিখোঁজ-নিহতের তালিকায় তোর নাম...এ সংবাদ কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। স্বপ্নবাজ ভাই আমার....ফিরে আয়।’
এভাবেই সহকর্মী-স্বজন-বন্ধুকে হারানোর কষ্টের কথা ফেসবুকে লিখেছেন অনেকে।
অপরদিকে ফয়সাল আহমেদের শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার উত্তর বড় সিধলকুড়া গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
ফয়সাল অফিস থেকে পাঁচ দিনের ছুটি নিয়ে গত সোমবার তিনি নেপালে যান। যাওয়ার আগে তিনি বড় বোন শিউলি বেগমকে বলে যান পাঁচ দিনের জন্য ঢাকার বাইরে যাচ্ছেন। তবে নেপাল যাওয়ার কথা বলেনননি তিনি। এমনকি অফিসেও জানাননি।
বাড়িতে তার মা সামসুন্নাহার, বাবা সামসুদ্দিন সরদার ও ছোট ভাই রাকিব কাউকেই জানাননি তিনি দেশের বাইরে যাচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়া শেষ করে ফয়সাল প্রায় ছয় বছর আগে সাংবাদিকতা পেশায় যোগ দেন। ফয়সাল আহমেদ তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে দ্বিতীয়।
ফয়সালের বাবা আলহাজ সামসুদ্দিন সরদার বলেন, আমি জানি ফয়সাল ঢাকায়। বাহাদুর বেপারী আমাকে বিকেলে ফোন করে জানতে চায় ফয়সাল কোথায়? এরপর আমি বড় মেয়েকে ঢাকায় ফোন করি। সে বলে ফয়সাল পাঁচ দিনের জন্য ঢাকার বাইরে গেছে। এরপর খবর নিয়ে জানতে পারলাম নেপালে বিধ্বস্ত বিমানে ফয়সাল ছিল।
আরও পড়ুন:
পি
মন্তব্য করুন