• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

এখন থাকুম কই?

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ১২ মার্চ ২০১৮, ১২:৩৮

কাম করি মাইনসের বাসায়। ছোট পোলা গার্মেন্টসে কাম করে। মাইয়া বিয়া দিছি এ বস্তিতে কয়দিন আগে। এহন মাইয়ার সংসার শেষ আমার সংসারও শেষ।

ইলিয়াস মোল্লার বস্তিতে পুড়ে যাওয়ার পর এভাবে বিমর্ষ হয়ে আহাজারি করছিলেন নিঃস্ব হয়ে যাওয়া সুলতানা।

সুলতানার প্রতিবেশী করিমন বিবি নামের এক নারী বিলাপ দিয়ে চিৎকার করে বলছিলেন, সমিতির টাকা ক্যামনে দিমু। সেলাই মেশিন পুইড়া ছাই হইয়া গেছে। খাবার নাই ঘরে। কি খামু, পরুম। আল্লাহ্‌ এ সর্বনাশ কেন আমারে কপালে আইলো।

করিমনের মতো হাজারো মানুষের অবস্থা একই। প্রত্যেকে শেষ সম্বল হারিয়ে পথে বসে গেছে। বেশির ভাগ মানুষ না খেয়ে এক কাপড়ে পুড়ে যাওয়া বস্তির সামনে বসে বিলাপ করছিলেন। কেউ কেউ পুড়ে যাওয়া স্থানে খুঁজে বেড়াচ্ছে না পোড়া সম্বল।

সোমবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে আগুনে এসব নিম্ন আয়ের মানুষের স্বপ্ন পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের ২৩টি ইউনিট সকাল ৭টা ২০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও ৮ হাজার মানুষ ততক্ষণে সব হারিয়ে ফেলেছেন। জীবন নিয়ে ঘর থেকে বের হলেও প্রয়োজনীয় সব হারিয়ে দিশেহারা এখন এ বস্তির মানুষেরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগুন খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল। স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী মোল্লার নামে নামকরণ-কৃত এ বস্তিটিতে সাত থেকে আট হাজার টিন ও কাঠের ঘর ছিল।

বস্তির এক বাসিন্দা জানান, রোববার দিবাগত রাত ৩টার কিছু আগে তারা আগুন দেখতে পান। সেসময় ঘর থেকে দ্রুত বেরিয়ে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে পারলেও ঘরের মালামাল উদ্ধার করতে পারেননি। বেশির ভাগ বস্তিবাসীর দশাই তার মতো বলেই তিনি জানান।

সকালে দেখা যায়, মিরপুর-১২ নম্বর এ বস্তিতে আগুন লাগার পর চারদিকে মানুষ ছুটাছুটি করতে থাকে। চোখের সামনে সব হারাতে দেখে তাদের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে সেখানকার পরিবেশ।

বস্তিবাসীরা বলেন, প্রথমে শুধু ধোয়া দেখেছি। এরপর কোনো রকমে প্রাণটা হাতে নিয়ে ঘর ছেড়ে বাইরে বেড় হয়ে এসেছি। আমাদের সব শেষ।

--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন: পুড়ল হাজারো ঘর, দিশেহারা বস্তিবাসী
--------------------------------------------------------

রাত সাড়ে ৩টার দিকে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ। এর পরপরই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। প্রথমে ১৪টি ইউনিট কাজ করলেও পরে আরও ৯টি ইউনিট তাদের সঙ্গে যোগ দেয়।

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) মেজর শাকিল বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে ২৩টি ইউনিট কাজ করে। ঘটনাস্থলে আসার রাস্তাগুলো সরু থাকায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি পৌঁছাতে অনেক সময় লেগে যায়। এতে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেশ বেগ পেতে হয়েছে।

আগুনের সূত্রপাত এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, বস্তির বাসিন্দারা বেশির ভাগই পোশাক কারখানায় কাজ করেন। সবার ঘরেই পোশাকের ঝুট এবং প্রচুর পরিমাণে দাহ্যবস্তু ছিল। যার ফলে আগুন খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

এদিকে স্থানীয় সাংসদ ইলিয়াছ আলী মোল্লা জানান, বস্তিতে থাকা প্রায় সব ঘরই আগুনে পুড়ে গেছে। এসব ঘরে প্রায় ২৫ হাজারের মতো মানুষ বসবাস করতেন। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সব রকমের সাহায্য করা হবে।

আরও পড়ুন:

এমসি/জেএইচ

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে চার জেলায়, বাড়বে অস্বস্তি
রাজধানীর বনশ্রীতে আবাসিক ভবনে আগুন
টঙ্গীতে আগুনে পুড়ল খাদ্যপণ্যের ১২ গুদাম
শ্রীপুরে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়লো কৃষকের ৯ ঘর
X
Fresh