• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

‘মানুষের ভালোবাসা মৃত্যুর গ্রাস থেকে ফিরিয়ে আনবে’

আরটিভি অনলাইন ডেস্ক

  ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১১:০১

যে ক’দিন বাঁচবো দেশের মাটির গন্ধ নিয়েই বেঁচে থাকতে চাই। পাশে চাই পরিচিতজনদের। প্রিয় মাতৃভূমির হিমশীতল বাতাসে গাঁ জুড়িয়ে প্রাণভরে নিশ্বাস নিয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে চাই। লন্ডনের হিথ্রু বিমানবন্দরে এভাবেই কথাগুলো বলে বাঙালিদের থেকে বিদায় নিয়েছিলেন বাংলার সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক।

ফুসফুসে ক্যান্সারের চিকিৎসা নিতে গেল ১৫ এপ্রিল লন্ডনে যান সৈয়দ শামসুল হক। প্রায় পাঁচমাস চিকিৎসা শেষে মৃত্যুর দিনক্ষণ মাথায় নিয়ে দেশে ফিরতে হয়। চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন ছয়মাসের মধ্যে তাকে পৃথিবীর মায়া ছাড়তে হবে। কিন্তু মৃত্যুর কাছে এতো তাড়াতাড়ি হার মানতে নারাজ এ ক্ষণজন্মা লেখক। তিনি মনে করতেন, মানুষের ভালোবাসা তাকে মৃত্যুর গ্রাস থেকে জীবনে ফিরিয়ে আনবে।

কিন্তু মানুষের ভালবাসাকে পরাজিত করে মৃত্যু তাকে গ্রাসই করেছে। লক্ষ কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দনকে উপেক্ষা করে মৃত্যুর ডাকে তাকে সাড়া দিতে হয়েছে। এ যে নিয়তি, যাকে উপেক্ষা করা যায় না। মেনে নিতে হবে প্রতিটি প্রাণকে।

ঢাকায় ফিরে অসুস্থ কবি হাসপাতালে পূর্ণ বিশ্রামে ছিলেন। আত্মীয়-স্বজন, ঘনিষ্ঠজন ছাড়া কেউ সাক্ষাৎ পাননি। তবে লেখার কাজ অব্যাহত রেখেছিলেন। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কবি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলেন, যে লেখা দিয়েছে সম্মান, পরিচিত করেছে বাংলার এ প্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে। তাকে কি ছাড়া যায়? ডাক্তারের নিয়ম ও নির্দেশ উপেক্ষা করেই লেখা চালিয়ে যাচ্ছি।

আবেগাপ্লুত সব্যসাচী লেখক প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে দেন, যতদিন বেঁচে থাকবো লিখেই যাব। আমি বিশ্বাস করি জাতির পিতার কন্যার হাত ধরেই ২০২১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তি পালন করবে। ২০২০ সালে জাতির জনকের জন্ম শতবার্ষিকীতে জাতি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার পাবে।

তার চিকিৎসার সমস্ত খরচ কাঁধে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কবিকে আশ্বস্ত করেছিলেন, ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকীর জাতীয় অনুষ্ঠানে আপনি আহবায়কের দায়িত্ব পালন করবেন এ আশাই করি। দেশবাসী আপনার থেকে আরো ক্ষুরধার লেখনি প্রত্যাশা করে।

কিন্তু শত আশার প্রদীপ নিভে যায় মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টায়। লাখো ভক্তকে কাঁদিয়ে ৮১ বছর বয়সে প্রিয় কবি চলে গেলেন পরপারে।

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh