বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ উদযাপনে প্রস্তুত সোহরাওয়ার্দী
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।
বেলা ১১টা থেকে এ উদ্যানে সমবেত হচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের জনতা।
এরইমধ্যে সমাবেশকে সফল করতে ময়দানকে সাজানো হয়েছে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের আবহে। ময়দানের চারপাশ জুড়ে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
সমাবেশে জাতির জনক এবং মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে লেখা গান, কবিতা ও নাচ পরিবেশন করবেন সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
শনিবার বিকেলে লাখো মানুষের এই সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিকে জাতির জনকের ভাষণের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিকে কেন্দ্র করে দুপুর ১২টায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়েছে। শোভাযাত্রাটি কলাবাগান, সাইন্সল্যাব, শাহবাগ হয়ে সমাবেশস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করবে।
বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো।
ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি কমিটি ইউনেসকোর মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড (এমওডব্লিউ) কর্মসূচির অধীনে আন্তর্জাতিক তালিকায় (ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টার) মোট ৭৮টি দলিলকে মনোনয়ন দিয়েছে। এ তালিকায় ৪৮ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণটিকে স্থান দেয়া হয়েছে।
বিশ্ব ঐতিহ্য ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার আন্তর্জাতিক তালিকাই মূলত মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড। এর মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন অংশের ঘটনার সংরক্ষণ ও সবার কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে ইউনেসকো। এই তালিকায় ঠাঁই পেতে হলে পর্যাপ্ত গ্রহণযোগ্যতা ও ঐতিহাসিক প্রভাব থাকতে হয়।
প্যারিসে ইউনেসকোর প্রধান কার্যালয়ে ২৪ থেকে ২৭ অক্টোবর চার দিনের এক সভায় বসেছিল ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি কমিটি (আইএসি)। সেখানে ইউনেসকোর মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড প্রোগ্রামের পক্ষ থেকে মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল নিবন্ধনের জন্য ৭৮টি দলিলকে মনোনয়ন দেয়া হয়।
আইএসির এই কমিটিতে ছিলেন ১৫ জন বিশেষজ্ঞ। এর চেয়ারম্যান ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের ন্যাশনাল আর্কাইভের মহাপরিচালক আবদুল্লাহ আলরাইজি।
তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে নতুন করে প্রস্তাব করা ঐতিহাসিক দলিল পরীক্ষা ও মূল্যায়ন করেন। দুই বছরের প্রক্রিয়া শেষে ২০১৬-১৭ সালের জন্য দলিলগুলোকে মনোনয়ন দেয়া হয়।
মনোনয়নগুলো সম্পর্কে সুপারিশ করে ইউনেসকোর মহাপরিচালক ইরিনা বকোভা বলেন, ‘আমি গভীরভাবে বিশ্বাস করি, এ কর্মসূচি পরিচালিত হওয়া উচিত দালিলিক ঐতিহ্য ও স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য। যাতে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সংলাপ, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, পারস্পরিক বোঝাপড়া ও শান্তির চেতনা তাদের মনে লালন করতে পারে।’
১৯৯২ সালে মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড প্রোগ্রাম চালু করে ইউনেসকো। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দালিলিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও ব্যবহারে সচেতনতার তাগিদে এটি চালু হয়।
যুদ্ধ ও সামাজিক অস্থিরতা, সম্পদের অপ্রতুলতার কারণে দালিলিক ঐতিহ্য নিয়ে সমস্যা বেড়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন সংগ্রহশালা বিনষ্ট হয়েছে। লুটপাট, অবৈধ বিক্রি, ধ্বংস, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো ও তহবিলের উদ্যোগে নষ্ট হয়েছে দলিল। অনেক দলিল নষ্টের ঝুঁকিতে।
জেবি
মন্তব্য করুন