সু চির ভূমিকা ‘হতাশাজনক’ : রুশনারা আলী
ব্রিটেনের লেবার পার্টির এমপি রুশনারা আলী। তিনি বার্মা বিষয়ক অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের প্রধান। রুশনারা আলী বেশ কয়েকবার মিয়ানমার ভ্রমণও করেছেন। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে ব্রিটেনের অবস্থান ও ভূমিকা নিয়ে গতকাল বুধবার তিনি বিবিসি চ্যানেল ৪-কে এক সাক্ষাৎকার দেন। সাক্ষাৎকারটি আরটিভি অনলাইনের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো :
জাতিসংঘ বলছে যে মিয়ানমারে টেক্সটবুক জাতিগত নিধন চলছে, তাহলে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে দেশটির এত ভালো সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও বিট্রেন কেন এত দেরিতে প্রতিক্রিয়া জানানো শুরু করল?
রুশনারা আলী : আমি মনে করি অন্যান্য দেশের মত যুক্তরাজ্যও প্রতিক্রিয়া দেখাতে দেরি করেছে কারণ সম্প্রতি বার্মায় একটি গণতান্ত্রিক সরকার এসেছে। তাই বিশ্ব সম্প্রদায় মনে করেছে এর ফলে দেশটিতে রোহিঙ্গা ও অন্যান্য সংখ্যালঘু যেমন শান এবং কোচিন পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে। কিন্তু তেমনটা ঘটেনি। তারপরও বিশ্ব সম্প্রদায় এবং যুক্তরাজ্য এই ঘটনার নিন্দা জানানো যথেষ্ট সময় নিয়েছে। আর এই ঘটনা এই প্রথম নয় যে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এটা একটা প্যাটার্ন বা নমুনা মেনে চলছে আর তাই জাতিসংঘ এটাকে টেক্সবুক জাতিগত নিধন হিসেবে উল্লেখ করেছে। আমি খুশি যে দেরিতে হলেও যুক্তরাজ্য রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে সোচ্চার হচ্ছে। তবে এটা যথেষ্ট নয়। আমরা চাই দেশটির উপর জাতিসংঘ সমর্থিত একটি সামিরক নিষেধাজ্ঞা করা হোক। এ ছাড়াও আমরা মন্ত্রীদের কাছে আরো কিছু দাবি জানিয়েছে।
সুচির সঙ্গে লেবার পার্টির সম্পর্ক বেশ পুরোনো উল্লেখ করে উপস্থাপক জানতে চান বার্মার নেতার কী তার বাবার মত আরও জাতীয়তাবোধ দেখানো উচিত ছিল না?
রুশনারা আলী : তার এ বিষয়ে আরো বেশি কিছু করা উচিত ছিল। এটা গভীরভাবে ‘হতাশাজনক’ যে তিনি যেকোন ধরনের হস্তক্ষেপ করতে এতটা সময় নিলেন এবং তার প্রতিক্রিয়া ছিল লজ্জাজনক। তবে তার কথা বলার সীমাবদ্ধতার বিষয়টিকেই শুধু সমালোচনা করলে হবে না। এবং একজন এমপি বলেছেন, গৃহবন্দিত্ব থেকে কথা বলছেন এবং তার সোচ্চার হওয়া উচিত। এখানে তাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। যদিও সেনাবাহিনী দেশটির বিভিন্ন বিষয় নিয়ন্ত্রণ করছে তারপরও তিনি দেশটির দায়িত্বে আছেন। তবে সেনাবাহিনীর উপর চাপ প্রয়োগ করতে হবে। না হলে আমরা ফোকাস হারিয়ে ফেলবে এবং তারা জাতিগত নিধন অব্যাহত রাখবে। মিয়ানমারে মাত্র কয়েক হাজার রোহিঙ্গা মুসলমানই এখন অবশিষ্ট আছে।
আপনি এবং অন্যান্য যারা আছেন যারা রোহিঙ্গা ইস্যুতে কিছু বলার ব্যাপারে কী কখনও তাকে কিছু বলেছেন?
অবশ্যই। গত ফেব্রুয়ারিতে তার সাথে আমার দেখা হয়েছে। এবং আমি তাকে বলেছি এ বিষয়ে তার আরো সোচ্চার হওয়া উচিত। এসময় তিনি আনান কমিশনের রিপোর্টের কথা উল্লেখ করেন। কিন্তু ওই কমিশন রিপোর্টের জবাবে দেশটির সেনাবাহিনী জাতিগত নিধন চালিয়ে যাচ্ছে। তার কর্মকাণ্ড যথেষ্ট নয়। কিন্তু বেসামরিক এবং সামরিক উভয়ের উপর চাপ প্রয়োগ করে যেতে হবে।
এ/এপি/এমকে
মন্তব্য করুন