‘জামায়াতের কেউ যেন নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে’
যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতের কেউ যেন ব্যক্তিগত, দলগত বা জোটের হয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারে সে বিষয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে এ প্রস্তাব দেয় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ।
আজ (রোববার) সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান, জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
দলের পক্ষ থেকে ইসিকে জানানো হয়, জামায়াতে ইসলামীর অনেকে বিএনপি এবং এর নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের হয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ার পরিকল্পনা করছে।
জাসদ বর্তমান সংসদীয় আসনের সীমানায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তাব করেছে উল্লেখ করে হাসানুল হক ইনু বলেন, একটি নিবন্ধিত দল থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য অনিবন্ধিত দলে যোগদান করলে ওই অনিবন্ধিত দলকে রেজিস্ট্রেশনের জন্য কোয়ালিফাই না করার বিধান করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
দলছুট এমপিদের জাসদের নামের সঙ্গে সামঞ্জস্য কোনো নামে নতুন দল নিবন্ধনের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও সুপারিশ করে তারা বিদ্যমান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বা কাছাকাছি নামে কোনো দলকে নতুনভাবে নিবন্ধন না দেয়ার অনুরোধ জানান।
তিনি জানান, জাসদের পক্ষ থেকে নির্বাচন ব্যবস্থা ডিজিটালাইজ করার লক্ষ্যে নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের প্রস্তাব করা হয়েছে।
জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বে ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দল আজ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাথে সংলাপে অংশ নিয়ে এ প্রস্তাব দেয়।
ইসির সঙ্গে সংলাপে জাসদ ১৭টি প্রস্তাব উপস্থাপন করে। জাসদের অন্যান্য দাবিগুলো হল- সেনাবাহিনীকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞা অন্তর্ভুক্ত না করা, মনোনয়নপত্রের সাথে হলফনামা প্রদানের বিধান বাতিল করা, জামানত ২০ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ১০ হাজার টাকা করা, নিবন্ধিত দলের ব্যয় নির্বাহে ও প্রচারণায় নিয়মিত অনুদান, স্বতন্ত্র প্রার্থিতায় এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনের শর্ত বাতিল, দলের অনুদান আয়কর মুক্ত রাখা, অনলাইনে মনোনয়নের ব্যবস্থা, ভোটে কালো টাকার ব্যবহার রোধে প্রার্থিতা বাতিল, প্রতীক বরাদ্দের দিনই জোটভুক্তদের প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার সুযোগ রাখা, স্থানীয় ও সংসদ নির্বাচনে স্বপদে থেকে নির্বাচন না করার বিধান রাখা, নির্বাচন আর্কাইভ স্থাপন করা এবং পাবলিক ও বেসরকারি পর্যায় থেকে অবসরের পর ভোটে অংশ নেয়ার শর্ত শিথিল করা।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বিকেলে অনুষ্ঠিত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। এ সময় কমিশনারবৃন্দ, ইসি সচিবালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিবসহ কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ইসির সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে ১২ দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, নির্বাচনী মামলা তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি, না ভোটের ব্যবস্থা করা, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত, নির্বাচনকালীন সরকারের মেয়াদেই সব স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা ও উপনির্বাচনের বিধান বাতিল করে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত প্রার্থীকে নির্বাচিত ঘোষণার বিধান করার দাবি জানায় দলটি।
এ পর্যন্ত ২৫টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
আগামীকাল (সোমবার) সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে ১১টায় সংলাপে বসবে কমিশন।
জেএইচ
মন্তব্য করুন