• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২০বার হত্যা চেষ্টা করা হয়’

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ২০ আগস্ট ২০১৭, ১৭:৩৬

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে ঘাতকরা। সে সময় বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান তার দুই কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ১৯৮১ সালে দেশে ফিরেন শেখ হাসিনা। হাল ধরেন আওয়ামী লীগের।

দেশে ফেরার পর থেকেই তাকে হত্যার জন্য সক্রিয় হয়ে ওঠে বিএনপি-জামাতসহ প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী। এই পর্যন্ত ২০ বার তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমত ও দেশের জনগণের ভালাবাসার কাছে পরাজিত হয় ঘৃণ্য এই ঘাতক চক্রের সকল ষড়যন্ত্র।

রোববার বিকেলে নিজের ফেসবুক ওয়ালে দেয়া পোস্টে এসব তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন।

ফেসবুকে দেয়া পোস্টে খোকন লেখেন, ১৯৮৭ সালে প্রথম শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। ওই বছরের ১০ নভেম্বর স্বৈরাচারবিরোধী অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে সচিবালয়ের সামনে তার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। এ সময় আওয়ামী লীগ কর্মী নূর হোসেন মারা যান।

তিনি আরো উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হামলার বড় চেষ্টা চালানো হয় ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি। ওই দিন তিনি জনসভা করতে চট্টগ্রাম যান। বিমানবন্দর থেকে মিছিল করে জনসভাস্থলে যাওয়ার পথে মিছিলে হামলা হয়। সেদিনও তার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। ওই হামলায় প্রায় ৪০ জন নেতাকর্মী নিহত হয়।

এর পর ১৯৮৮ সালের ১৫ আগস্ট ফ্রিডম পার্টির অস্ত্রধারীরা শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবনে গুলি ও গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। শেখ হাসিনা তখন ওই বাসাতেই থাকতেন।

হামলা হয় ১৯৯১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনের সময় ধানমন্ডির গ্রীনরোডে ভোটকেদ্রে দেখতে গেলে শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান তিনি।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ট্রেনমার্চ করার সময় ১৯৯৪ সালে পাবনার ঈশ্বরদী রেলস্টেশনে হামলার শিকার হন শেখ হাসিনা। তাকে বহনকারী ট্রেনের কামরা লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। সেই গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় তিনি বেঁচে যান।

১৯৯১ সালের পর ফের ১৯৯৫ সালের মার্চ মাসে রাজধানীর পান্থপথে আওয়ামী লীগের জনসভায় বোমা হামলা চালানো হয়। তখন দলের নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন।

এক অনুষ্ঠান থেকে বের হওয়ার পর ১৯৯৬ সালের মার্চ মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল থেকে শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে অস্ত্রধারীরা। আল্লাহর রহমতে তিনি সেই হামলা থেকেও প্রাণে বাঁচেন।

এর পর ২০০০ সালের ২০ জুলাই নিজ জেলা গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে জনসভাস্থলের কাছে পুঁতে রাখা হয়েছিল ৭৬ কেজি ওজনের বোমা। যেটি গোয়েন্দাদের কাছে ধরা পড়ে। বোমাটি বিস্ফোরিত হলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত গোটা সভাস্থল।

বোমা হামলা করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিলো ২০০১ সালের ২৯ মে। খুলনার রূপসা সেতুর উদ্বোধন করতে যাওয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। ঘাতকরা সেখানেও বোমা পুঁতে রাখে, পরে গোয়েন্দা পুলিশ তা উদ্ধার করে।

বিএনপি-জামাত চক্র ২০০৩ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরার কলারোয়াতে শেখ হাসিনার গাড়ী বহরে গুলিবর্ষণ করে। সেই হামলা থেকে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান তিনি।

ফের ২০০৪ সালের ২ এপ্রিল বরিশালের গৌরনদীতে শেখ হাসিনার গাড়ী বহরে গুলিবর্ষণ করে বিএনপি-জামাতের ঘাতকরা। আর শেখ হাসিনাকে হত্যার সবচে বড় হামলা হয় এই বিএনপি জামাত সরকারের সময়।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হয় আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশস্থলে। সেখানেও আল্লাহর অশেষ রহমতে অল্পের জন্য বেঁচে যান তিনি। যে ট্রাকটিতে বক্তব্য দিচ্ছিলেন, সেই ট্রাকে নিক্ষেপ করা গ্রেনেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় প্রাণে বাঁচেন শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের অধিকাংশ কেন্দ্রীয় নেতা।

তবে ভয়াবহ সেই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী। আহত ও আজীবনের জন্য পঙ্গু হয়েছেন এক হাজারের অধিক নেতাকর্মী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার সবশেষ চেষ্টা হয় চলতি মাসের গেলো ১৫ আগস্ট। ওই দিন ধানমন্ডি ৩২ নাম্বার থেকে ২০০ গজ দূরেই একটি হোটেলে অবস্থান নিয়েছিল এক আত্মঘাতী জঙ্গি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আগেই টের পেয়ে তাকে ঘিরে ফেলায় জঙ্গিটি সুইসাইড বেল্ট বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আত্মঘাতী হয়।

এইচটি/জেএইচ

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh