বেঈমানদের হাতে কলঙ্কিত হয় বাংলার ইতিহাস (ভিডিও)
শোকাবহ ১৫ আগস্ট আজ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২ তম শাহাদাত বার্ষিকী। জাতীয় শোক দিবস। ১৯৭৫ সালের এদিন সেনাবাহিনীর কিছু বিশ্বাসঘাতক অফিসার বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে আঘাত হানে বাঙালি জাতির অস্তিত্বে। আবারো বেঈমানদের হাতে কলঙ্কিত হয় বাংলার ইতিহাস।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসের পাতায় ভিন্ন এক ভোর। সূর্য তখনও আকাশে আলোর আভা ছড়ায়নি। দূর থেকে ভেসে আসছিলো আযানের ধ্বনি। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ির চারপাশ ঘিরে দাঁড়ায় সেনা বোঝাই কয়েকটি ট্রাক ও জিপ। বাড়ির চারপাশে পজিশন নেয় ভারী কামান।
অতর্কিতে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র আর কামান থেকে শুরু হয় তুমুল গুলিবর্ষণ। বাড়ির চারপাশে মুর্হুমুহু গুলি চলতে থাকে।
প্রচণ্ড গুলির শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায় বাড়ির সবার। অপ্রস্তুত কিংকর্তব্যবিমূঢ় প্রত্যেকেই ঘরের ভেতর ছুটোছুটি শুরু করেন। বঙ্গবন্ধু দোতলা থেকে নিচে নেমে আসেন। বিভিন্ন জায়গায় টেলিফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। ফোন সেরে আবার উঠে যান দোতলায়। সিঁড়িতে বাড়ির কাজের লোক রমা তাকে পাঞ্জাবী ও পাইপ হাতে দেন। এরইমধ্যে ঘাতকদল ভেতরে ঢুকে বাড়ির নিচতলায় হত্যা করে মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালকে।
বঙ্গবন্ধু ছুটে আসার চেষ্টা করেন নিচে। কথা বলেন সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে। তারা কি চায়? কেন এসেছে? এসব প্রশ্ন করলে কোনো উত্তর না দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সিঁড়ির কাছে ঘিরে ধরে ঘাতকদল। তাকে লক্ষ্য করে ব্রাশ ফায়ার করা হয়। সিঁড়িতে লুটিয়ে পড়েন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি।
ঘাতকের বুলেটের আঘাতে প্রাণ হারান বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব। ঘাতকেরা তারপর একে একে গুলি করে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর দু’ ছেলে সেনা কর্মকর্তা শেখ জামাল, ১০ বছরের শিশুপুত্র শেখ রাসেল এবং নবপরিণীতা দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামালকে। অকাতরে প্রাণ দেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ আত্মীয় স্বজনসহ তার নিরাপত্তাকর্মীরা।
ওই রাতে জাতির পিতার পাশাপাশি হত্যার শিকার হন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর পুত্র-পুত্রবধূ, আত্মীয়-স্বজনসহ মোট ১৮ জন, যা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। কালের মহানায়কের হত্যার বিভীষিকাময় দিনটি আজও ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন হয়ে আছে, প্রতিটি বাঙালিসহ, বিশ্ব সভ্যতার হৃদয়ে।
কাপুরুষ ঘাতকরা ভোরের নির্জনতার আড়ালে তাদের বিশ্বাসঘাতকতার হিংস্র রূপ দেখায়। তবে যুগের পর যুগ তাদের সেই নির্মম নিষ্ঠুরতার সাক্ষী হয়ে থাকবে ইতিহাসে।
- জাতীয় শোক দিবস আজ
- জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
- ‘জন্মদিন পালন করে খালেদা সংলাপের পরিবেশ নষ্ট করেছেন’
আরকে/জেএইচ
মন্তব্য করুন