• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ছিটমহল বিনিময়ের দুই বছর, গ্রামে গ্রামে উৎসবের আমেজ (ভিডিও)

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ৩১ জুলাই ২০১৭, ১৯:১৯

ছিটমহল বিনিময়ের দুই বছর পূর্তি মঙ্গলবার। ২০১৫ সালের এদিন বদলে গিয়েছিল সীমান্তে বসবাসকারী অর্ধলক্ষ মানুষের জীবন। ৬৮ বছরের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পান তারা এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের ফলে।

গেলো বছরের মত এবারো দিবসটি উদযাপন করার প্রস্ততি নিয়েছে বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী। গ্রামে গ্রামে চলছে উৎসবের আমেজ।

২০১৫ সালের ১ আগস্ট শূন্য প্রহরে বিলুপ্ত হয় দু’দেশের ভেতরে থাকা ১৬২টি ছিটমহল। রাত ১২টা ১ মিনিটে বাংলাদেশের ভেতরের ১১১টি ছিটমহলের মধ্যে সবচেয়ে বড় ছিটমহল কুড়িগ্রামের দাশিয়ার ছড়ায় ৬৮টি মোমবাতি জ্বালিয়ে এই মাহেন্দ্রক্ষণকে স্মরণীয় করে রাখে ছিটমহলবাসী।

একযোগে একই কর্মসূচি পালিত হয় কুড়িগ্রামের ১২টি, লালমনিরহাটের ৫৯টি, পঞ্চগড়ের ৩৬টি এবং নীলফামারী জেলার ৪টি ছিটমহলে।

বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় ১১১টি ছিটের ৪১ হাজার ৪৪৯ জন মানুষ বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে গণ্য হয়। এরপর থেকে ছিটবাসীর জীবনমান উন্নয়নে রাস্তা, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ সরকারের নেওয়া নানা কর্মসূচির বাস্তবায়ন শুরু হয়।

ছিট বিনিময়ের দুই বছর পূর্তিতে বিলুপ্ত ছিটমহল দাশিয়ার ছড়ার কালিরহাট বাজারে সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন হবে।

মঙ্গলবার সকালে জাতীয় সংগীতের তালে তালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবে নব্য বাংলাদেশিরা। পরে বেলা ১১টায় একটি বিজয় র‌্যালি বের হয়ে বিলুপ্ত ছিটমহলের আঁকা-বাঁকা পথ প্রদক্ষিণ করবে।

বিলুপ্ত ছিটের মানুষদের সাথে এ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে র‌্যালিতে সরকার দলীয় স্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ সমাজের সর্বস্তরের লোকজন অংশগ্রহণ করবে। এছাড়া আনন্দ র‌্যালিতে বিলুপ্ত ছিটের শিশু-কিশোর ও বয়স্ক শত শত নারী পুরুষ অংশ নেবে। র‌্যালি শেষে শুরু হবে দেশীয় নাচ। এতে সব বয়সের নারী-পুরুষ যে যার মত নেচে গেয়ে আনন্দ-উল্লাস করবে।

পরে দুপুর গড়িয়ে গেলে বিতরণ করা হবে খিচুরি। এভাবে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে তাদের আনন্দ-উল্লাস।

অপরদিকে ছিটলমহল বিনিময়ের দুই বছরপূর্তিতে জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার বাঁশকাটা বিলুপ্ত ছিটমহলের অনুষ্ঠানে যোগ হচ্ছে ভিন্ন মাত্রা। এখানে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে হা-ডু-ডু, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলাসহ বিভিন্ন শিশুতোষ খেলাধুলা।

সন্ধ্যার পর আয়োজন করা হয়েছে দেশীয় পালাগানের আসরসহ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

১৯৭৪ সালে ইন্দিরা-মুজিব চুক্তিটি বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ অনুমোদন করলেও দীর্ঘ ৪২ বছর ধরে ঝুলিয়ে রাখে ভারত। ২০১১ সালে ঢাকায় হাসিনা-মনমোহন প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়। নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর দু’দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে ছিট মহল বিনিময়ের বিষয়টি প্রাধান্য পায়। পরে ২০১৫ সালের ৫ মে ভারতীয় মন্ত্রিপরিষদে স্থল সীমান্ত বিলটির অনুমোদন দেওয়া হয়। ৬ মে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যসভায় বিলটি সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। ভারতের লোকসভায় বিলটির চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে ছিটমহল বিনিময়ের বিষয়টি আলোর মুখ দেখে।

ভারতের অভ্যন্তরে থাকা ৫১টি ছিটমহলের অবস্থান পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলায় ৪৭টি এবং জলপাইগুড়ি জেলায় ৪টি। লোকসংখ্যা ১৪ হাজার ২১১ জন।

ছিটমহল বিনিময়ের ফলে বাংলাদেশ পায় ১৭ হাজার ২৫৮ একর এবং ভারত পায় ৭ হাজার ১১০ একর জমি।

এসজে

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh