• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

পানিতে ভাসছে ঢাকা (ভিডিও)

মিথুন চৌধুরী

  ০৫ জুলাই ২০১৭, ১৫:০২

রাজধানীতে দু’দিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে বিভিন্ন জায়গায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও কোমর পানি। পানি পার হয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রাজধানীবাসীকে। জমে থাকা বৃষ্টির পানির কারণে ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল। রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় গর্ত থাকায় ঘটছে দুর্ঘটনা।

ফলে বুধবার সকাল থেকে কর্মমুখী মানুষদের ভোগান্তির শেষ ছিল না। ঢাকার মতিঝিল, শান্তিনগর, আরামবাগ, মিরপুর, বাড্ডা, যাত্রাবাড়ী, তেস্তুরী বাজারসহ বিভিন্ন জায়গার প্রধান সড়কে পানি জমে গেছে। ফলে পুরো নগরে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট ও পরিবহন সংকট।

পরবর্তী ৭২ ঘন্টার জন্য বুধবার আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, মৌসুমী বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, হারিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে উওর-পূর্ব দিক আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগর মাঝারী থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।

পূর্বাভাসে আরো বলা হয়, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রামও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে।

এদিকে বুধবার সকালে ঘর থেকে বের হয়েই দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে রাজধানীর অফিসগামী মানুষকে। সড়ক ও অলিগলিতে পানি জমে যাওয়ায় সড়কে দিনভরই বাস, সিএনজি, অটোরিকশা, রিকশা, ট্যাক্সিক্যাবের সংখ্যা দেখা গেছে খুবই কম। এতে অনেকেই সকালে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন বিপাকে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গণপরিবহন না পেয়ে দুর্ভোগ পেরিয়ে দেরিতে পৌঁছাতে হয় কর্মস্থলে। অনেককে আবার বৃষ্টিতে ভিজে হেঁটে ছুটতে দেখা গেছে কর্মস্থলে।

রাজধানীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, শহরের বেশিরভাগ রাস্তাঘাটে হাটু পানি জমে থাকায় গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে অনেকে জুতো-স্যান্ডেল হাতে নিয়ে, শার্ট-প্যান্ট গুটিয়ে যেতে হচ্ছে। পানি পার হতে অনেকেই রিকশার সাহস্য নিচ্ছেন। শুধু পানি পার করতে রিকশা ভাড়া নেয়া হচ্ছে ২০-৫০ টাকা।

এছাড়া নগরীর অলিগতিতে রিকশা, অটোরিকশা, সিএনজিসহ বিভিন্ন ছোট ছোট পরিবহনের চালকরা ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন।

বর্ষা মৌসুমে রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে গেলো ২ বছর একযোগে ড্রেনেজ উন্নয়ন কাজ করেছে ঢাকার দু’ সিটি করপোরেশন ও ঢাকা ওয়াসা। এরপরও বৃষ্টি হলেই জলজট ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে, কাদাপানিতে নাকাল হচ্ছেন নগরবাসী। বেশির ভাগ এলাকায় ইট, খোয়া, বালু, পাথর উঠে মাটি বেরিয়ে পড়া সড়কে বৃষ্টি হলেই হাঁটু সমান কাঁদাপানি জমছে।

আরামবাগের বাসিন্দা মাজহার খান বলেন, এ এক অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। একে তো বৃষ্টিতে বের হতে পারছি না, তার ওপর রাস্তার বেহাল দশা। কীভাবে ভালো থাকতে পারি।

বেসরকারি চাকরিজীবী মৌসুমি ইসলাম জানান, অফিস যেতে বাসা থেকে বের হতেই বৃষ্টি শুরু। অপেক্ষা করছি বৃষ্টি থামার। কিন্তু এরইমধ্যে অনেকটুকু ভিজে গেছি।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শাহবাগ এলাকায় দেখা যায়, মৎস্য ভবন থেকে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হয়ে শাহবাগ শিশুপার্ক পর্যন্ত শ' শ' গাড়ি ঠায় দাঁড়িয়ে। কখনও তা একটু এগিয়েই আবার থেমে যাচ্ছে। ত্যক্ত-বিরক্ত যাত্রী ও গাড়ির স্টাফদের অনেকে জানান, একেকটি সিগন্যাল পার হতে আধাঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা সময় লাগছে।

রাজধানীতে জলাবদ্ধতার জন্য ঢাকা ওয়াসাকেই দায়ী করছেন নগরবাসী। তারা বলছেন, রাজধানী ঢাকায় শতাধিক খাল ছিল। কিন্তু এগুলো বেদখল হতে হতে এখন তা দাঁড়িয়েছে ৪৩টিতে। এরমধ্যেও ১৭টি খাল মোটামুটি সচল রয়েছে। বাকি খালগুলো বেদখল। ঢাকার আশপাশের নদীগুলোর অবস্থাও একই রকম।

এমসি/ এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh