ঈদ আনন্দ ছুঁতে পারে না যাদের
ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে খুশি। দুঃখ ভুলে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়ার দিন। কিন্তু কিছু হতভাগা মানুষ আছে যাদের কোন উৎসব ছুঁতে পারে না, এমনকি ঈদও।
উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা ঈদ উৎসব উদযাপনে নানা আয়োজন করেছে। রয়েছে মুখরোচক খাবার। রঙ্গীন বাহারি রঙ-বেরঙের পোশাক। কিন্তু দরিদ্র মানুষগুলো আনন্দ খুঁজে নিচ্ছে অলস ঘুমের মাঝে দিনটি কাটিয়ে দিয়ে।
সোমবার ঈদের দিন রাজধানীর ব্যস্ততম কারওয়ান বাজার এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। কথা হয় বেশ কয়েকজন দিন মুজুরের সঙ্গে। মধ্য বয়সী বিউটি সন্তান নিয়ে বসে আছেন কারওয়ান বাজারের আলুর আড়তে। সন্তানকে শুকনো রুটি আর পানি খাওয়াচ্ছেন।
তিনি জানালেন, তার কাছে ঈদের দিন আর অন্যদিন সমান। তার দৃষ্টিতে ঈদ বড় লোকদের জন্য। তবে তারও ইচ্ছে হয় আর সবার মতই ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে। বিউটি দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর ধরে কারওয়ান বাজারের বস্তিতে থাকেন। কারওয়ান বাজারে রাতে আসা ট্রাক থেকে পড়ে যাওয়া তরকারি কুড়িয়ে নিয়ে তা বিক্রি করে সন্তান নিয়ে কোন রকমে জীবন নির্বাহ করে যাচ্ছেন। কিন্তু চাঁদ রাতে কারওয়ান বাজারে পণ্যবাহী ট্রাক তেমন না আসায় সে তরকারি কুড়াতে পারেনি। এখন রান্না করার জন্য বাজারে তরকারি কুড়াতে এসেছেন।
তিনি বলেন, সেমাই, পায়েশ, কোরমা পোলাও তার কাছে এখনো স্বপ্ন। দীর্ঘদিন ধরে নতুন পোশাক পড়ারও ইচ্ছে হয় না। কারণ ইচ্ছে করে লাভ কি? টাকা থাকলে হয়ত ইচ্ছে হতো। সেই কত দিন আগে ১শ' টাকা দিয়ে একটি পুরাতন শাড়ী কিনেছিলেন।
ঝুড়িতে শুয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন ৪০ বছরের জহিরুল হক। তিনি বলেন, ‘ভাইরে দুই বেলা খাবার পাই না। আমাদের আবার ঈদ কিসের?’ আজকে কাজ নাই তাই শুইয়ে আছি। কুলির কাজ করে সংসার চালাই। দেশের বাড়িতে সন্তান ও বউ থাকে। ওদের জন্য ২ হাজার টাকা পাঠাইছি। যে হারে জিনিষের দাম বাড়ছে। তবুও যা হয়।
কারওয়ান বাজারের পেট্রোবাংলা ভবনের উল্টা পাশে ডাব বিক্রি করছেন নজরুল। সে ২ বছর ধরে এখানে ডাব বিক্রি করেন। আগে রিকশা চালাতেন। রিকশা চালাতে গিয়ে পা ভেঙ্গে যাওয়ায় আর কিছুই করতে পারেন না। ঈদের দিন কিভাবে কাটবে জানতে চাইলে নজরুল জানান, ঈদের নামাজ পড়ে কাস্টমারের জন্য বসে আছি। মানুষজন নাই তাই বেচা বিক্রি কম।
এমসি/ এমকে
মন্তব্য করুন