• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

এক বছরেই চালের দাম বাড়ল কেজিতে ১৬ টাকা

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ২৩ জুন ২০১৭, ২০:০২

অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে চালের দাম। বাজারে মোটা চালই এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে। সরু চালের কেজি ৬০ টাকা ছাড়িয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে মোটা চালের দাম রেকর্ড ভাঙায় নিম্ন আয়ের মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। টিসিবি হিসাবে ১ বছরে মোটা চালের দাম বেড়েছে ১৬ টাকা। গেল বছরের এ দিনে মোটা চাল বিক্রি হয়েছিল ৩০ থেকে ৩৪ টাকা। আর আজ শুক্রবার বিক্রি হচ্ছে ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা। ফলে বাৎসরিক মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ৪৬.৮৮ শতাংশ।

এদিকে পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বাজার ও মুদি দোকানে এ দাম আরো বেড়ে যায় ২ থেকে ৫ টাকা।

টিসিবির সবশেষ হিসাবে দেখা যায়, সরু চাল গেল বছরের এ দিনে বিক্রি হতো ৪৪ থেকে ৫৫ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, নাজির বিক্রি হতো ৪৪ থেকে ৪৮ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, পাইজাম বিক্রি হতো ৪০ থেকে ৪২ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা।

শুক্রবার রাজধানী কারওয়ান বাজার ও হাতিরপুল বাজার ঘুরে দেখা যায়, মোটা চাল প্রতি কেজি ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, পারিজা চাল ৪৬ টাকা, মিনিকেট (ভালো মানের) ৬০ টাকা, মিনিকেট (সাধারণ) ৫৬ টাকা, বিআর২৮ ৫০-৫২ টাকা, সাধারণ মানের নাজিরশাইল ৫৪ টাকা, উন্নত মানের নাজিরশাইল ৫৬ টাকা, পাইজাম চাল ৫০-৫২ টাকা, বাসমতি ৫৬ টাকা, কাটারিভোগ ৭৬-৭৮ টাকা এবং পোলাও চাল ১০০(পুরাতন), নতুন ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর কাওরানবাজার ও রেলগেট এলাকায় রিকশা চালান সুজন হাওলাদার। বাড়ি ময়মনসিংহ। তিনি বলেন, পরিবারের সদস্য ৫ জন। তিনবেলাই ভাত খেতে হয়। প্রতিদিন ২ কেজি চাল কিনতে হয়। এক বছর আগে প্রতিদিন চাল কিনতে আমার খরচ হতো ৬৫ টাকা, এখন খরচ হচ্ছে ১০০ টাকা। আমাদের তো আয় বাড়েনি। এত টাকা দিয়ে চাল কিনে আমরা কী করে বাঁচবো। দিন ঠিকই পার হচ্ছে, তবে খুব কষ্টে। ভাত খাওয়া কমিয়েছি। আগে একবেলায় দুই প্লেট ভাত খেতাম। এখন এক প্লেট।

চালের দাম কমাতে গেল মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জানালেন, চালের ওপর আমদানি শুল্ক ২৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী এটা করা হয়েছে।

গেল সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সব তফসিলি ব্যাংককে চাল আমদানিতে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে বিনা মার্জিনে ঋণপত্র খোলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

সরকারি গুদামের মজুদ কমে আসায় বাজার নিয়ন্ত্রণে চাল আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ভিয়েতনাম থেকে ৯০৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকায় আড়াই লাখ টন চাল আমদানি করা হবে। সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি গত ১৪ জুন দরপত্র ছাড়াই সরকারি পর্যায়ে এই চাল আমদানির অনুমতি দেয়। ভিয়েতনাম থেকে প্রতি টন ৪৭০ মার্কিন ডলার দরে ৫০ টন সিদ্ধ চাল কিনতে খরচ হবে ১৯৫ কোটি ৫ লাখ টাকা।

এছাড়া ৪৩০ মার্কিন ডলার দরে দুই লাখ টন আতপ চাল আমদানিতে ৭১৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা খরচ হবে। ভিয়েতনামের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি ভিনাফুড টু এই চালের ৬০ শতাংশ চট্টগ্রামবন্দর দিয়ে এবং বাকি ৪০ শতাংশ মোংলাবন্দর দিয়ে সরবরাহ করবে।

এদিকে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভিয়েতনামের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ট্রান ভান খোয়া জাতীয় সংসদ কার্যালয়ে সাক্ষাৎকালে জানান, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে চালের প্রথম চালান বাংলাদেশে পৌঁছাবে।

ব্যবসায়ীরা জানান, দেশে প্রতিবছর প্রায় সাড়ে তিন কোটি টন চাল উৎপাদিত হয়, যার প্রায় ৬০ শতাংশ আসে বোরো মৌসুমে। গত মৌসুমে ১ কোটি ৮৯ লাখ টন বোরো চাল উৎপাদিত হয়েছিল। এ বছর আগাম বৃষ্টিতে বিস্তীর্ণ হাওর অঞ্চল তলিয়ে যাওয়ায় পাকা ধান নষ্ট হয়ে গেছে। যে কারণে চালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা কম হতে পারে। এজন্য মৌসুমের শুরু থেকেই ধানের দাম চড়া। তাদের দাবি, উত্তরবঙ্গে নতুন মৌসুমের ধান মণপ্রতি ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছর ৮০০ টাকার মধ্যে ছিল।

তবে ব্যবসায়ীদের এসব কথা মানতে নারজ সাধারণ ভোক্তারা। তারা দাবি করছেন, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এ দাম বাড়িয়ে তোলছে।

এমসি/সি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
আরটিভির মাধ্যমে সংগীত পরিচালনায় নাম লেখালেন জিকো
সেই ইজিবাইকচালকের পাশে দাঁড়াল র‌্যাব
অষ্টগ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ট্রাকচালকের মৃত্যু 
রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে ৪৩ জনকে গ্রেপ্তার
X
Fresh