ভ্যাট ১৫ শতাংশই থাকছে : অর্থমন্ত্রী
নতুন মূসক ও সম্পূরক শুল্ক আইনে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ থাকছে। তবে ভ্যাটমুক্ত টার্নওভারের সীমা বাড়ানো হচ্ছে। যা দুই একদিনের মধ্যে ঠিক করা হবে। জানালেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
শনিবার সচিবালয়ে আসন্ন বাজেট নিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
বর্তমানে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত টার্নওভার(বার্ষিক বিক্রি) ভ্যাটমুক্ত রয়েছে। এছাড়া ৩০ লাখ থেকে ৮০ লাখ টাকা পর্যন্ত টার্নওভারের ক্ষেত্রে ৩ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয় ব্যবসায়ীদের। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, এ সীমা ১ কোটি ২০ লাখ টাকা বা তার বেশি করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ভ্যাটের হার ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪ বা ৫ শতাংশ করা হতে পারে। আমরা এই বাজেটে ছোট ব্যবসায়ীদের বিশেষ ছাড় দিচ্ছি।
বাজেটের আকার জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, নির্দিষ্ট অংকটা বলছি না। তবে এবারের বাজেট চার লাখ কোটি টাকার চেয়ে কিছুটা বেশি হবে। এর পরের বাজেট ৫ লাখ কোটি টাকার মতো হবে। এ সরকারের অন্যতম কৃতিত্ব হচ্ছে ৯৫ হাজার কোটি টাকা থেকে বাজেটকে চার লাখ কোটি টাকার বেশিতে নিয়ে যাওয়া। মানব সম্পদে আগের চেয়ে অনেক বেশি জোর দেয়া হচ্ছে ও বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে। কৃষি খাত আগের মতো থাকছে।
মুহিত বলেন, এ সরকারের সময়ে তার দেয়া কোনো বাজেটের পরপরই দ্রব্যমূল্য বাড়েনি। এ ভ্যাট কাঠামোতে বাজারে পণ্যমূ্ল্যে প্রভাব ফেলবে না। রোজার কারণে ব্যবসায়ীরা দ্রব্যমূল্য কিছুটা বাড়িয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আগামী ১ জুন বেলা দেড়টায় জাতীয় সংসদে ‘উন্নয়নের মহাসগরে বাংলাদেশ: সময় এখন আমাদের’ শিরোনামে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হবে। সন্ধ্যার আগে বাজেট বক্তৃতা শেষ হবে। আগামী ২৯ জুন সংসদে বাজেট পাস হবে।
এর আগে গেল ২২ মে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রাক বাজেট আলোচনায় অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, ভ্যাট হার ১৫ শতাংশ থাকছে না এটা নিশ্চিত। তবে কত কমছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। ভ্যটের হার কত কমছে তা চূড়ান্ত করা হবে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে। তখন গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তা জানিয়ে দেয়া হবে।
গেল বুধবার সন্ধ্যায় সফররত জাইকা প্রেসিডেন্ট শিনিচি কিতাওকার সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছিলেন ভ্যাট হার কমানো বেশ কষ্টকর হবে। ১ শতাংশের বেশি কমাতে হলে নতুন করে সফটওয়্যার করতে হবে। তবে এজন্য দুই মাস সময় লাগবে।
নতুন আইন অনুযায়ী ১৫ শতাংশ ভ্যাটে আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন ব্যবসায়ীরা। তারা ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ কমাতে অনেকবার অর্থমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১ জুলাই থেকে ভ্যাট আইন কার্যকর হবে। ২০১২ সালের ‘মূসক ও সম্পূরক শুল্ক আইন’ গত বছরের ১ জুলাই থেকে কার্যকরের কথা থাকলেও ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে তা সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশের মূসক-ব্যবস্থার আওতায় মূলত তিনটি কর আদায় করা হয়—মূসক, সম্পূরক শুল্ক এবং টার্নওভার কর। তাই নতুন আইনের শিরোনামের সঙ্গে ‘সম্পূরক শুল্ক’ যোগ করে নামকরণ হয় ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২’।
এমসি/সি
মন্তব্য করুন