মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে অবমাননায় যাবজ্জীবন
যেকোনো ইলেকট্রনিক মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বা আদালত কর্তৃক মীমাংসিত মুক্তিযুদ্ধের বিষয়াবলি ও জাতির পিতার বিরুদ্ধে প্রপাগাণ্ডা চালালে বা অবমাননা করলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক কোটি টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড হবে।
সোমবার মন্ত্রিসভায় ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৬’ খসড়ায় এ কথা বলা হয়েছে। মন্ত্রিসভা এই নতুন আইনের খসড়া প্রাথমিক অনুমোদন দিয়ে সেটি আরো পর্যালোচনা ও পরীক্ষা করতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে দায়িত্ব দিয়েছে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
আইনের খসড়ার বিষয়ে সচিব বলেন, কেউ যদি ডিজিটাল সন্ত্রাস করে তাহলে তার সাজা হলো ১৪ বছরের কারাদণ্ড ও এক কোটি টাকা জরিমানা। ইলেকট্রনিক মাধ্যমে গোপনীয়তা লঙ্ঘন বা পর্নোগ্রাফি করলে তার শাস্তির বিধানও রয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৪, ৫৫, ৫৬ ও ৫৭ নম্বর ধারাগুলো এই আইনে সমন্বয় করা হয়েছে বলে জানান সচিব।
আইনের ১৯ ধারায় বলা হয়েছে, কেউ যদি ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক মাধ্যমে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করে, যা মিথ্যা, অশ্লীল এবং যা মানুষের মনকে বিকৃত ও দূষিত করে, মর্যাদাহানি ঘটায় বা সামাজিকভাব হেয়প্রতিপন্ন করে অথবা কেউ যদি স্বেচ্ছায় কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার উদ্দেশে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করে, যা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেউ পাঠ করলে বা দেখলে বা শুনলে তা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করতে পারে, তাহলে তিনি অনধিক দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন অথবা দুই লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।
এ ছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে নারী ও পুরুষের গোপনাঙ্গের সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি এই সংজ্ঞা অনুযায়ী গোপনাঙ্গের কতটুকু অংশের ছবি ও ভিডিও গণমাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার বা প্রকাশ করা যাবে তা-ও নির্ধারণ করা হয়েছে।
শিশু পর্নোগ্রাফি রোধে কঠোর বিধানের কথাও বলা হয়েছে খসড়া এই আইনে। প্রস্তাবিত আইনের ১৭ নম্বর ধারার ৪ (গ) উপধারায় বলা হয়েছে,,‘গোপনীয় অঙ্গ অর্থ নগ্ন বা অন্তর্বাস পরিহিত যৌনাঙ্গ, যৌনাঙ্গের আশপাশ, নিতম্ব বা মহিলার স্তন।’
অনুমোদনের জন্য ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৬’-এর খসড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পেশ করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ। আইনটির বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর মতামতও নেয়া হয়।
মন্তব্য করুন